বিজেপি কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনিতে। ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিতে ‘হিংসা’র শিকার হয়ে বারাবনির ছাতাডাঙালের বেশি কয়েকটি পরিবার ঘরছাড়া হয়েছিল। তাঁদের অনেকেই এখন ফিরে এসেছেন। তাঁদেরই এক পরিবার ফের হামলার মুখে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে ও দোষীদের তিনদিনের মধ্যে শাস্তির দাবিতে বুধবার আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অফিসে আসে জেলা বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল।
এদিন, জেলা পুলিশ কমিশনারেটে একটি স্মারকলিপি জমা দেন পদ্মকর্মীরা। সেই স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে দোষীদের তিনদিনের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। গোটা ঘটনার তদন্ত করতে হবে। বিজেপির তরফে ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন জেলার কনভেনার শিবরাম বর্মণ। এছাড়াও ছিলেন, রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, জেলা যুব মোর্চার সভাপতি অরিজিৎ রায়, সুদীপ চৌধুরী-সহ অন্যরা।
প্রসঙ্গত, বিজেপি কর্মী বাপি প্রধান ও কৃষ্ণা সাওয়ের বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা আকবর আলম ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন পাড়া-প্রতিবেশীরা গোপনে মোবাইলে গোটা বিষয়টি রেকর্ডিং করেছিলেন। সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল নেতারা ওই পরিবারের সদস্যদের ধাক্কা দিচ্ছেন এবং চড় থাপ্পড় মারছেন।
এমনকি বাপি প্রধানেরর বৃদ্ধা মায়ের উপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই ভিডিওতে সেই দৃশ্যও দেখা যাচ্ছে। সোমবার রাতে ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বারাবনি থানার পুলিশ। কিন্তু পুলিশ আসার আগেই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। ওই এলাকায় পুলিশ প্রহরা মোতায়েন রয়েছে। তা সত্ত্বেও এই ধরনের হামলার ঘটনা ঘটে গেল ওই এলাকায়। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি এটি একটি পারিবারিক বিবাদের ঘটনা। এর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। তবুও দোষী ব্যক্তি যেন শাস্তি পায়, তার জন্য পুলিশকে তাঁর আবেদন করবেন বলে তৃণমূল নেতৃত্বর দাবি। আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর দাবি, “আমি আগে বিজেপি করতাম না। বিজেপি যে গেছি, তার জন্যও ওরাই দায়ী। আমাকে আগে থেকেই সন্দেহ করত যে আমি বিজেপি করছি। তাই রেগেই বিজেপিতে গেছিলাম। যারা আমার ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদের ওপর আমার আগেই ফোনে যোগাযোগ ছিল। রাজেশ মিদ্দা সে নিজেও বিজেপি করবে বলে ঝাঁপিয়ে গিয়েছিল। আমিই তখন তোকে আটকেছিলাম। আজ ওরাই আমাকে হুমকি দিচ্ছে। আমার ওপর হামলার ভিডিয়ো রয়েছে।”
এ প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা যুব সভাপতি অরিজিত্ রায় বলেন, “ভোট পরবর্তী হিংসার শিকার হয়েছিল ওই পরিবারগুলি। হাইকোর্টের নির্দেশে তাঁরা বাড়িতে ফিরেছিলেন। কিন্তু আজ সকালেই ফের ওদের পরিবারে হামলা হয়। তৃণমূল কেন হামলা করল জানি না। এর নিন্দার কোনও ভাষা নেই। বাংলার পরিস্থিতি কী আছে, সেটাই মুখ্যমন্ত্রীর ভাবা উচিত। আকবর আলমের নেতৃত্বেই হামলা হয়েছে, হিংসা হয়েছে। ওকে আগে গ্রেফতার করা প্রয়োজন। তা না হলে এই এলাকার আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি ঠিক হবে না।”