এসএসসি গ্রুপ ডি পদে ৫৪২ জনের ভুয়ো নিয়োগের অভিযোগ আগেই সামনে এসেছে। এবার এসএসসি গ্রুপ সি পদে নিয়োগে বেনিয়মের অভিযোগ। মঙ্গলবার যার প্রেক্ষিতে এক মামলায় শুনানিতে এক কর্মীর বেতন বন্ধের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
আদালত সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় গ্রুপ সি পদে প্রায় ৪০০ ভুয়ো নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এক বাসিন্দার দায়ের করা মামলার শুনানিতে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ, সংশ্লিষ্ট পদে নিয়োজিত এক কর্মীর বেতন বন্ধ করতে হবে। এদিকে যে ৪০০ জনকে ভুয়ো নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের ৩৫০ জনকে ইতিমধ্যে নিয়োগপত্র বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পেয়ে গিয়েছেন বলে খবর।
যার প্রেক্ষিতে এদিন এই নিয়োগ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এবং ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সেই তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকেও সংশ্লিষ্ট মামলায় অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
গ্রুপ ডি -র পর গ্রুপ-সি পদেও ভুয়ো নিয়োগের অভিযোগে শুরু হয়েছে জোর চাপানউতোর। এদিকে এই ভুয়ো নিয়োগের ধরণ জেনে কার্যত বিস্মিত হয়ে যান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলে খবর। যে একজন ইতিমধ্যে চাকরি করছেন, আপাতত তাঁর বেতন বন্ধের নির্দেশ দেন তিনি।
এদিকে এদিনের শুনানি শেষে এক মামলাকারীর বক্তব্য, “আমরা ওয়েটিংয়ে ছিলাম। আমাদের কোনও র্যাঙ্কে পরিবর্তন হয়নি। তার পর তিন থেকে চারবার প্যানেল বেরিয়েছে। সেখানেও আমাদের র্যাঙ্কের কোনও পরিবর্তন হয়নি। আমরা বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানতে পারি কোনও নিয়োগ হতে পারে। তার পর, আমরা মামলা করি। আজ যেটা জানতে পারলাম, আজ যে হেয়ারিং হল, সাড়ে তিনশো জন মতো প্যানেল এক্সপায়ার হওয়ার পরেও অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার পেয়েছেন বলে দেখা যাচ্ছে। সেটা আমাদের আইনজীবী বিচারপতির কাছে জমা দিয়েছেন”। তিনি আরও যোগ করেন, “নির্দেশ এসেছে একজনের বেতন বন্ধ আপাতত। বিস্তারিত তালিকা চেয়েছে আদালত”।
এ নিয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিনহার কটাক্ষ, “তৃণমূল কোনও ক্ষেত্র ছাড়েনি। যারা করোনা ভ্যাকসিনে দুর্নীতি করতে পারে তারা এসএসসি গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি পদে নিয়োগে দুর্নীতি করবে, এটা তো স্বাভাবিক”। তিনি আরও যোগ করেন, আমি মনে করি আদালত যেভাবে এই বিষয়গুলি দেখছে তাতে সাধারণ মানুষের আইনের প্রতি আস্থা বাড়ছে। তবে শুধু একজনের বেতন বন্ধ করা হলে হবে না। আমরা মহামান্য আদালতের কাছে আবেদন, যারা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত সেই মাথাদের শাস্তি দেওয়া হোক। লেখাপড়া না জেনে শুধু টাকার জোরে চাকরি পাওয়ার যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে অচল করে দেওয়ার ব্যবস্থা শুরু হয়েছে তা বন্ধ হওয়া দরকার”।