শুক্রবারের পর আজ, শনিবারও সকাল থেকে তপ্ত নন্দীগ্রাম। কৃষি দফতরে স্মারকলিপি জমা দেওয়ার কর্মসূচিতে কর্তব্যরত সরকারি কর্মীকে হেনস্থা ও মারধরের অভিযোগে ৬ বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে এবার শনিবার সকাল থেকে পাল্টা বিক্ষোভ বিজেপির। শনিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা নন্দীগ্রামে বনধ্-এর ডাক দিল তমলুক সাংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতৃত্ব।
হরিপুর কিষান মান্ডিতে বিক্ষোভের পর হরিপুর ৫ নম্বর অঞ্চল এর প্রধান, উপপ্রধান-সহ পঞ্চায়েত সদস্যদের নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ গ্রেফতার করে। তারই প্রতিবাদে বনধ। অভিযুক্ত সবাইকে আজ হলদিয়া মহকুমা আদালতে পেশ করা হবে । এদিন ভোর থেকে বিজেপি কর্মীরা সক্রিয়ভাবে বনধ পালনে রাস্তায় নেমেছেন। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে নতুন করে তৈরি না হয়, তার জন্য নন্দীগ্রামের বিভিন্ন রাস্তায় পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা রয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার সকালে। কৃষিক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে কৃষি দফতরে ডেপুটেশন দিতে যায় বিজেপি। অভিযোগ, বিজেপির মিছিল চলাকালীন কৃষি দফতরের কর্মীকে হেনস্থা, মারধর করেন বিজেপির মহিলা কর্মীরা।
নন্দীগ্রামের হরিপুর অঞ্চলে কিষান মাণ্ডিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি জমা দিতে আসেন বিজেপি কর্মীরা। কৃষি দফতরের বাইরে যখন মিছিল এসে পৌঁছয়, সে সময় বিশেষ কাজে বাইরে যাচ্ছিলেন বরুণ মণ্ডল নামে এক জন আধিকারিক। প্রথম থেকেই বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বিজেপি কর্মীরা। কিন্তু ওই আধিকারিককে সামনে পেয়েই রীতিমতো চড়াও হন তাঁরা। রীতিমতো কিল, চড়, ঘুষি মারা হয় তাঁকে। ক্যামেরায় ধরা পড়ে লাল শাড়ি পরিহিত এক মহিলা রীতিমতো আধিকারিকের জামা ধরে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসছেন। এমনটাই অভিযোগ উঠছে। নন্দীগ্রামের কৃষি দফতরের সামনে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
বিজেপির অভিযোগ, কৃষি দফতরের তরফে যে সব সুযোগ সুবিধা সাধারণ মানুষ পেয়ে থাকেন, তা প্রভাব খাটিয়ে নিজেদের পরিচিতদের দিচ্ছেন কর্মীরা। নন্দীগ্রামের মানুষ সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এক্ষেত্রে সরকারি পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রেও রাজনৈতিক রঙ দেখা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এরই প্রতিবাদে মহিলা কর্মীদের নিয়ে কৃষি দফতরে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি নেয় বিজেপি।
বিশাল মিছিল করে তাঁরা কৃষি দফতরের সামনে উপস্থিত হন। কিন্তু আচমকাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। দফতরের বাইরে একটি বিশেষ কাজে বেরচ্ছিলেন এক আধিকারিক। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন মহিলা কর্মীরা। তাঁকে রীতিমতো হিঁচড়ে টেনে আনা হয়। অভিযোগ, ওই আধিকারিকই বিশেষভাবে স্বজনপোষণ করে থাকেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। তবে দফতরের বাকি আরও কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ রয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নন্দীগ্রাম থানার বাহিনী। ঘটনায় অবশেষে ৬ জন বিজেপি কর্মীসমর্থককে গ্রেফতার করল পুলিশ।