তৃণমূল নেতার পুকুর ছোট হয়ে যাবে, তাই রাস্তা করছেনা দাইহাট পুরসভা, অভিযোগ স্থানীয়দের।

তৃণমূল নেতার পুকুর ছোট হয়ে যাবে বলে রাস্তা করছে না পুরসভা, এমনই অভিযোগ স্থানীয়দের। রাস্তা না পেয়ে অগত্যা পুকুরের এক কোমর জল পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। এমনকি শিশুদের কোলে করে জলে নেমে পার করিয়ে দিতে হচ্ছে বড়দের। এদিকে রাস্তা না থাকার কারণে, এলাকায় নেই বিদ্যুৎ। নেই পানীয় জলের ব্যবস্থাও। দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে রাস্তা না পেয়ে এই ভাবে যাতায়াত করতে হচ্ছে দাইহাট পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গোপাল নগর এলাকার কয়েকটি পরিবারকে। অভিযোগ, রাস্তা তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট তৃণমূল নেতা-সহ পুরসভাতে দরবার করেও লাভ হয়নি। উল্টে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য রাস্তা হবে না বলেই নাকি জানানো হয়েছে!

বিভিন্ন প্রয়োজন ও শিশুদের বিদ্যালয় বা প্রাইভেটে নিয়ে যেতে হয় কোলে করে পুকুরের জল পেরিয়ে। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে সমস্যায় দাইহাট পুর সভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কতগুলি পরিবার। যদিও কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা অন্য এক ব্যক্তির ব্যক্তিগত বাগান দিয়ে প্রয়োজনে বা রাত বিরেতে যাতায়াত করে পরিবারগুলি। এলাকাবাসীদের অভিযোগ, এলাকার ওই প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা তথা পুরকর্মী গৌতম চন্দ্র তার পুকুরের অংশ ছোট হয়ে যাওয়ার কারণে রাস্তা তৈরিতে বাধা দিচ্ছে। এছাড়াও পুর প্রশাসকের খাস লোক হওয়ায় পুরসভাকে রাস্তা তৈরিতে বাধা দিয়ে প্রভাব খাটানো হচ্ছে। যদিও এই অভিযোগ মানতে চাননি অভিযুক্ত ওই প্রভাবশালী নেতা। রাজনৈতিক ভাবে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। আর পুর প্রশাসক শিশির কুমার মণ্ডলের দাবি, “ওখানে সমস্যা রয়েছে। তবে রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে। অন্য দিকে বিজেপির কটাক্ষ, এলাকার বাসিন্দাদের গায়ে তৃণমূল তকমা লাগলেই রাস্তা হয়ে যাবে।

জানা গিয়েছে, ১৯৮৪ সালে দাইহাটের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালনগরের ঘাট কাটা পুকুরের ধারে তৃণমূল নেতা গৌতম চন্দ্রের বাবা পরমানন্দ চন্দ্র কতকগুলি পরিবারকে নিজস্ব জায়গা বিক্রি করেন। যাতায়াতের রাস্তা হিসাবে পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে চার ফুট চওড়া ও আনুমানিক দুশো মিটার লম্বা পুকুর পাড়ের জায়গা রাস্তা হিসাবে উল্লেখ করেন। যা ক্রেতাদের দলিলে উল্লেখ রয়েছে। বর্তমানে পরমানন্দ চন্দ্র গত হয়েছেন। এর পর থেকেই রাস্তা নিয়ে দেখা দেয় সমস্যা। এখন পুকুরের পাড় ভাঙতে ভাঙতে জলে ডুবে গিয়েছে দলিলে উল্লেখিত রাস্তা। পাশে অন্য এক ব্যক্তির জায়গা থাকলেও তা কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। ফলে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় করণ দশা বাসিন্দাদের। চরম সমস্যায় দাইহাটের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালনগর এলাকার দশ-বারোটি পরিবার। রাস্তা চেয়ে প্রশাসন সহ বিভিন্ন দরবারে হন্যে হয়ে ঘুরছে পরিবারগুলি। কিন্তু সমস্যা মিটছে কই!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.