হাওড়ার বালি থানা এলাকার পদ্ম বাবু রোড থেকে এক মাস আগেই উদ্ধার হয়েছিল রাজারহাট থানার এসআই পার্থ চৌধুরীর দেহ। দিনটা ছিল গত ২০ অক্টোবর। পুলিশ সূত্র মারফত খবর রাজারহাট থানার এসআই দুর্গাপুজোর পঞ্চমীর দিন ডিউটি করেছিলেন। তারপর থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরিবারের পক্ষ থেকে বেলুড় থানায় একটি নিরুদ্দেশের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।
এদিকে বালি থানার পুলিশ রাস্তার উপর পড়ে থাকা রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ পাঠানো হয় হাওড়া জেলা হাসপাতালে। দেহটি সনাক্ত না হওয়ার কারণে অজ্ঞাত পরিচয় ছিল দীর্ঘ এক মাস ধরে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা রাজারহাট থানার পুলিশদের দায়িত্ব দেন, অবিলম্বে এস আই পার্থ চৌধুরীর সন্ধান দিতে হবে।
সেই মত রাজারহাট থানার পুলিশ বিভিন্ন জেলা পুলিশের মেইল চেক করে। সেখানে বেশ কিছু অজ্ঞাত পরিচয় দেহের সন্ধান মেলে। হাওড়া জেলা পুলিশের মর্গের দেহের ছবি তোলে ন্যাশনাল স্টুডিওর কর্মীরা। সেই মতো তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অজ্ঞাত পরিচয় দেহের ছবি দেখতে চাওয়া হয়। দেহটি চিহ্নিত করে রাজারহাট থানার পুলিশ। সেই মতো খবর দেওয়া হয় পরিবারের লোকজনকে। গতকাল রাতেই সেই দেহ শনাক্ত করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, ২০ অক্টোবর বালি ব্রিজের কাছে পার্থ চৌধুরীর দেহ উদ্ধার হয়। দেহটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তখন থেকে মৃত পুলিশ সাব ইনস্পেক্টরের দেহ হাওড়ার পুলিশ মর্গেই রাখা হয়েছিল। পার্থবাবুর দেহ এক মাস আগে উদ্ধার হলেও, তাঁর মোবাইল পাওয়া যায়নি।
তবে প্রশ্ন উঠছে হাওড়া কমিশনারেটের পুলিশের আওতায় বালি ও বেলুড় থানা। সে ক্ষেত্রে একজন পুলিশ অফিসারের দেহ শনাক্ত করতে কেন এক মাস সময় লাগবে?
রাজারহাট থানার পুলিশ অফিসারদের একাংশের প্রাথমিক অনুমান, মৃত পুলিশ সাব ইনস্পেক্টরের পারিবারিক অশান্তি প্রায়ই লেগে থাকত তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে। সেই কারণেই তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তদন্তে প্রাথমিকভাবে উঠে এসেছে এক সাধুর সঙ্গেই ওই এলাকায় দেখা গিয়েছিল পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পার্থ চৌধুরীকে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, স্ত্রী এবং ছেলেকে নিয়ে বেলুড়ের এক আবাসনে থাকতেন পার্থ চৌধুরী। তবে তাঁর মা এবং ভাই থাকেন চুঁচুড়ায়। পার্থ বাবুর সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর সম্পর্ক কেমন ছিল, তা নিয়ে অবশ্য বিশেষ কিছু জানা যায়নি। স্থানীয় সূত্রে পারিবারিক অশান্তির খবর পাওয়া গেলেও এই বিষয়ে পুলিশ আরও বিশদে তদন্ত করতে চাইছে।