EXCLUSIVE: ফোন করে ‘মমতা-দিদি’ পাওয়া অত সহজ নয়, জেনে নিন পর পর পদ্ধতি

নতুন করে পাওয়া যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এদিনই জানা গিয়েছে, সেই স্পেশাল ফোন নম্বর। যেখানে ফোন করে সরাসরি দিদির সঙ্গে কথা বলা যাবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিদান দিতে চলেছেন শীঘ্রই। কোনও সমস্যা বা মতামত থাকলে এ বার যে কেউ সরাসরি ফোন করতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রীকে। যে কর্মসূচির পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে, ‘দিদিকে বলো!’ ৯১৩৭০৯১৩৭০ এখন দিদিকে পাওয়ার নম্বর।

মমতা বা তৃণমূল কংগ্রেসের ঘোষণার আগেই ফোন করা হলে রীতিমতো ঘাবড়ে গিয়েছিলেন ফোনের ওপারে থাকা দিদির প্রতিনিধিরা। ফোন ধরলেন এক মহিলা। সুরেলা গলায় বললেন, “ওয়েলকাম টু দিদিকে বলো। আপনাকে স্বাগত।” এর পরে প্রথম প্রশ্ন, এই নম্বর কোথা থেকে পেলেন। বলা হল ফেসবুক থেকে পেয়েছি। কিছুটা চিন্তিত গলা শোনা গেল ফোনের ওপার থেকে। তবে সেটা কয়েক সেকেন্ডের। সামলে নিয়েই জানতে চাইলেন নাম, ধাম।

এই পর্বটা বেশ লম্বা। ফোনের ওপারের মহিলা শান্ত গলায় বললেন, দিদিকে ফোনে পেতে গেলে প্রথমে সাধারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সেগুলি দেওয়ার পরেই ফোনের লাইন ট্রান্সফার করা হবে দিদির অফিসে।

এর পরেই প্রশ্ন বাণ। প্রথমে নাম, বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা। এর পরে পেশা। সাংবাদিক শুনেই একটু থমকাল ওপাশের নারী কণ্ঠ। কারও সঙ্গে আলোচন শোনা গেল। তিনি অভয় দিতে পরের প্রশ্ন শুরু হল। একটা সময়ে মনে হল সঙ্গে আধার কার্ড থাকলে সুবিধা হত। পিনকোড থেকে থানা, ব্লক (পুরসভা বললে হবে না) সব বলার শেষে এল‌ মোক্ষম প্রশ্ন– “গ্রামে থাকেন না শহরে?”

প্রশ্ন করা ও উত্তর শোনার কায়দায় স্পষ্ট বোঝা গেল, এই প্রশ্নটি ও তার জবাবে পাওয়া তথ্যটি প্রশ্নকর্ত্রীর কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সব শুনে নেওয়ার পরে ওপারের নারীকণ্ঠ জানিয়ে দিল এত সব তথ্য দেওয়ার জন্য তিনি ধন্য। গোটা গোটা বাক্যে কল সেন্টারের সুরে ধন্যবাদ পর্ব মিটিয়ে বলা হল– এবার আপনার লাইনটি ‘মমতা দিদি’র অফিসে দেওয়া হচ্ছে।

এই বার ফোনের ওপারে এক পুরুষ কণ্ঠ– “মমতা দিদির অফিসে আপনাকে স্বাগত। বলুন আপনার কী উপকার করতে পারি।” দ্বিতীয় বার নিজের নাম বলতে যেতেই তিনি জানালেন, সব কিছুই স্ক্রিনে দেখা যাচ্ছে। এখন শুধু দিদিকে কী বলতে চাই সেটা বলতে হবে। আর কী বলতে চাই সেটা জানালেই ঠিক হবে কবে কখন দিদির সঙ্গে কথা বলা যাবে। জানানো হবে সাক্ষাৎকারের সময়। তবে একটাই শর্ত প্রাথমিক ভাবে তাঁকেই বলতে হবে কী দরকার আর কী কথা। কিছু না বললে সরাসরি দিদিকে পাওয়ার কোনও আশা নেই।

আশাহত হয়েই ফোন রাখতে হল। উনি জানালেন পরে আবার ফোন করবেন। মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

তবে কিছু সাংবাদিক সুলভ কৌতূহলও মেটালেন ‘মমতা দিদি’-র অফিসের পুরুষ কণ্ঠ। এটা কি তৃণমূল কংগ্রেসের অফিস? না। এটা কি মুখ্যমন্ত্রীর দফতর মানে রাজ্য সরকারের অফিস? না। তবে কি প্রশান্ত কিশোরের অফিস। হ্যাঁ। কলকাতা বেসড হলেও এই অফিসের সঠিক ঠিকানা আপনাকে বলা যাবে না। কেটে গেল ‌ফোন। না, কেটে যাওয়া আগে আরও একবার ওপার থেকে সুরেলা গলায় এল ফোন করার জন্য ও তথ্য দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।

পিনাকপাণি ঘোষ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.