এই প্রথমবার! ভারতে পুরুষের থেকে বেশি হল মহিলার সংখ্যা, উঠে এল সমীক্ষায়

এই প্রথমবার ভারতে পুরুষের থেকে বাড়ল নারীর সংখ্যা। এমনটাই উঠে এল জাতীয় পরিবার এবং স্বাস্থ্য সমীক্ষায়। ওই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি ১,০০০ জন পুরুষে ভারতে ১,২০০ জন মহিলা আছেন। সেইসঙ্গে ওই সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, আর জনবিস্ফোরণের আশঙ্কা নেই ভারতে। জনসংখ্যার বয়সও কমছে না।

গত বুধবার জাতীয় পরিবার এবং স্বাস্থ্য সমীক্ষার পঞ্চম পর্যায়ের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৯০ সালে ভারতে ১,০০০ জন পুরুষপিছু মহিলার সংখ্যা ছিল ৯২৭। ২০০৫-০৬ সালের জাতীয় পরিবার এবং স্বাস্থ্য সমীক্ষায় পুরুষ এবং মহিলার সংখ্যা সমান ছিল। অর্থাৎ প্রতি ১,০০০ জন মহিলায় পুরুষের সংখ্যা ছিল ১,০০০ জন। কিন্তু ২০১৫-১৬ সালে জাতীয় পরিবার এবং স্বাস্থ্য সমীক্ষায় তা কিছুটা কমে গিয়েছিল। মহিলা এবং পুরুষের অনুপাত দাঁড়িয়েছিল ৯৯১:১,০০০। এবার পুরুষদের টেক্কা দিয়েছেন মহিলারা। তার ফলে জাতীয় পরিবার এবং স্বাস্থ্য সমীক্ষা হোক বা আদমশুমারি – এই প্রথমবার কোনও পরিসংখ্যানে পুরুষদের নিরিখে নারীদের সংখ্যা বেশি থাকল।

তবে সেই তথ্য ‘স্যাম্পেল সার্ভে’-র (সমীক্ষা) ভিত্তিতে উঠে এসেছে। যে সমীক্ষা ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে করা হয়েছিল। দেশের ৭০৭ টি জেলার ৬৫০,০০০ জন বাড়িতে চালানো হয়েছিল সেই সমীক্ষা। দ্বিতীয় দফায় অরুণাচল প্রদেশ, চণ্ডীগড়, ছত্তিশগড়, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, দিল্লি, ওড়িশা, পুদুচেরি, পঞ্জাব, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, উত্তরাখণ্ড এবং উত্তরপ্রদেশে সমীক্ষা হয়েছিল। তাই বৃহত্তর জনসংখ্যার ক্ষেত্রে আদৌও সেই তথ্য প্রয়োজ্য কিনা, তা আদমশুমারির পরেই স্পষ্ট হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সমীক্ষার ফলাফলে সেই তথ্য উঠে এলেও অনেক রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ক্ষেত্রেই সেই তথ্য মিলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধিকর্তা এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব বিকাশ শীল বলেন, ‘পুরুষ ও নারীর অনুপাত এবং জন্মের সময় পুরুষ ও নারীর অনুপাত যে ভালো হয়েছে, তাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আদমশুমারি থেকে আসল ছবিটা স্পষ্ট হলেও এই ফলাফলের দিকে তাকিয়ে বলতে পারি যে নারীর ক্ষমতায়নের আমাদের পদক্ষেপগুলি সঠিক দিকে অগ্রসর হচ্ছে।’  উল্লেখ্য, গত পাঁচ বছরে জন্মের সময় পুরুষ এবং নারীর অনুপাত দাঁড়িয়েছে ১০০০:৯২৯-তে। তা থেকেই স্পষ্ট যে এখনও ছেলেদের প্রতি প্রাধান্য আছে। সেই পরিস্থিতিতেও পুরুষদের থেকে নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় (অবশ্যই সমীক্ষায়) আশাবাদী প্রশাসনিক মহল। তবে অনেকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন, নারী এবং পুরুষদের গড় আয়ুর মধ্যে ফারাক আছে। ভারতীয় সেনসাসের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ২০১০-১৪ সালের মধ্যে পুরুষ এবং মহিলাদের গড় আয়ু ছিল ৬৬.৪ বছর এবং ৬৯.৬ বছর। তাই ভারতের ক্ষেত্রে জন্মের সময় পুরুষ ও নারীর অনুপাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.