মেধা তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও হয়নি চাকরি। অবিলম্বে নিয়োগের দাবিতে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অনশন করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের সঙ্গে রাস্তায় এসে বসেছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরাও। এবার সেই ধর্না মঞ্চে হাজির হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বৈধভাবে যাতে দ্রুত এই প্রার্থীদের নিয়োগ সম্পূর্ণ হয়, সেই দাবিই তুলেছেন তিনি।
এ দিন ধর্না মঞ্চে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘তালিকা লঙ্ঘন করে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। গ্রুপ ডি মামলায় আদালতের বক্তব্যই প্রমাণ করেছে, এসএসি আসলে শুধু ঘুঘুর বাসাই নয়, এসএসসি টাই পুরোপুরি তুলে দেওয়া উচিৎ।’ তিনিও যেহেতু একসময় এসএসসি দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাই চাকরি প্রার্থীদের মনোকষ্টটা তিনি বুঝতে পারছেন বলে উল্লেখ করেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, ‘আমি নিজে এইরকম সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি। আমারও মনোকষ্ট ছিল। তাই আমি বুঝতে পারছি। মুখ্যমন্ত্রী বুঝতে পারছেন না।’ সুকান্তর কথায়, এনাদের দাবি সম্পূর্ণ বৈধ। দ্রুত স্বচ্ছতার সঙ্গে এদের নিয়োগ হওয়া উচিৎ।
এই ইস্যুতে বিজেপি বিধানসভাতেও সরব হবে বলে উল্লেখ করেছেন সুকান্ত। তিনি জানান এই বিষয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। নিয়োগে পরপর যে ভাবে দুর্ণীতির অভিযোগ সামনে এসেছে, সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এসএসসি শুধু ঘুঘুর বাসাই নয়, যেন ঘুঘুর বাসাতেই এসএসসি খোলা হয়েছে। তাঁর কথায়, ডাল মে কুছ কালা হ্যায় না, পুরো ডালটাই কালো হয়ে গিয়েছে।’
অভিযোগ আজকের নয়, অনেক দিনের। ২০১৬ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মেধা তালিকায় নাম থাকলেও হয়নি চাকরি। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি। তাই দিনের পর দিন অনশনে বসে চাকরির দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। গত ৩৪ দিন ধরে কলকাতার মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অনশনে বসেছে চাকরিপ্রার্থীরা। কার্যত মর্মস্পর্শী ছবি দেখা যাচ্ছে সেই অনশন মঞ্চে।
এমনকি পুজো চলাকালীনও বাড় ফেরেননি তাঁরা। তাঁদের সন্তানেরাও এসে বসেছে সেখানে। কারও কারও হাতে ব্যানারে লেখা, ‘আমার মা আর কতদিন ফুটপাথে থাকবে।’ এত কিছুর পরও রাজ্য সরকারের কোনও হেলদোল নেই বলেই অভিযোগ চাকরি প্রার্থীদের। তাঁদের দাবি, আদালতে যাওয়ার ক্ষমতা নেই সবার। আদালতের ওপর ভরসাও হারিয়েছেন তাঁরা। এত দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলে যে, চাকরি পেতে পেতে অবসরের সময় হয়ে যায় বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।
সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের গ্রুপ ডি নিয়োগ নিয়োও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সেই মামলার শুনানিতে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। ২৫ জনের নিয়োগের সুপারিশ কারা করল সেই তথ্য নেই বলে দাবি করেছে কমিশন। অথচ ওই ২৫ জন গত ২ বছর ধরে চাকরি করছেন।