মহেশতলায় বাইক নিয়ে বচসার জেরে নাগরিককে বেধড়ক মার, অবশেষে রামনগর থানায় বদলি অভিযুক্ত পুলিশকর্তা।

ফুটপাথে কুঁকড়ে পড়ে রয়েছে বছর কুড়ির এক যুবক। তাঁর বুকে-পিঠে অনবরত আঘাত করে চলেছে ভারী বুট পরা এক জোড়া পা। বুট জোড়া যাঁর পায়ে, তিনি আবার গ্রিন পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এক্সাইড মোড়ে এক গ্রিন পুলিশের কাণ্ডে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের কাঠগড়ায়  পুলিশই। রাস্তায় বাইক রাখাকে কেন্দ্র করে এক যুবকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি আর তাই থেকে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে শরীরের একাধিক হাড় ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে  মহেশতলা থানার এসআইয়ের বিরুদ্ধে। অবশেষে অভিযুক্ত পুলিশকর্তাকে বদলি করা হল। জানা গিয়েছে,  রামনগর থানায় বদলি করা হয়েছে মহেশতলার অভিযুক্ত সাব ইনস্পেক্টর আবুল মারজানকে।

মোটরসাইকেল রাখাকে কেন্দ্র করে মারধরের ঘটনায় তৃণমূল নেতা সুকান্ত বেরার ভাই আক্রান্ত সুমন্ত বেরার উকিল শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের মাধ্যমে আলিপুর আদালতে একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। সেই অনুযায়ী আদালতে, শ্রীকান্ত বেরার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে, অভিযুক্ত সাব-ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশমতোই অবশেষে অভিযুক্ত এসআইকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালী পুজোর রাতে একটি ওষুধের দোকানের সামনে বাইক রাখাকে কেন্দ্র করে বচসা এবং সেখান থেকে মারধরের ঘটনা ঘটে। মহেশতলা থানার এসআই আবুল মারজান সাদা পোশাকে নুঙ্গি স্টেশন সংলগ্ন একটি ওষুধের দোকানে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, তিনি বাইকটিকে এমনভাবে রাস্তার উপর রেখেছিলেন তাতে অন্যদের যাতায়াতের অসুবিধা হচ্ছিল। তারই প্রতিবাদ করে জনৈক সুমন্ত বেরা।

এর পর পুলিশ অফিসারের সঙ্গে তাঁর তর্কবিতর্ক হয়। অভিযোগ এর পর তাঁকে মারধর করেন ওই এসআই। সেখানেই শেষ হয়নি। পরে ওই যুবককে মহেশতলা থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে ওই এসআই বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। এসআই আবুল মারজানের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ করেছেন গুরুতর জখম হওয়া সুমন্তের পরিবার। জানা গিয়েছে, তাঁর শরীরের একাধিক হাড় ভেঙেছে পুলিশ অফিসারের মারে। এদিকে এ নবিয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে মহেশতালা থানা তা গ্রহণ করেনি বলেও অভিযোগ।

এর পর কালী পুজোর পরের দিন সুমন্ত বাবুকে আদালতে হাজির করা হয়। কিন্তু আদালত সুমন্ত বাবুর পরিস্থিতি দেখে তাঁকে জামিন দেন। তাঁকে চিকিৎসার পরামর্শ দেন। এখন মহেশতলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সুমন্ত বাবু চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বুধবার তাঁর অপারেশন হওয়ার কথা আছে। পরিবারের দাবি, এক্স-রে রিপোর্ট অনুযায়ী সুমন্তর শরীরের অন্তত চার জায়গায় হাড় ভেঙে গিয়েছে। এ নিয়ে সুমন্তর পরিবার আদালতের কাছে সুবিচার এর জন্য আবেদন করেছেন। অভিযোগ করেছেন ওই এসআই-র বিরুদ্ধে। যদিও পুরো ঘটনায় এ পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত এসআই বা মহেশতলা থানার তরফে। এদিকে এই ঘটনার প্রবল নিন্দা করেছেন এলাকার বিধায়ক দুলাল দাস। তিনি আইনত এর বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.