বড় সাফল্য় এনকাউন্টার অভিযানে। মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলি জেলার গয়রাপট্টি জঙ্গলে শনিবার অভিযান চালায় মহারাষ্ট্র পুলিশের সি-৬০ বাহিনী (C-60 Unit) এবং কয়েক ঘণ্টার গুলির লড়াইয়ে মোট ২৬ জন নকশালকে নিকেশ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সংঘর্ষে তিনজন কম্যান্ডো-ও আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
গড়চিরোলির পুলিশ সুপার অঙ্কিত গোয়েল জানান, এ দিন সকালে মহারাষ্ট্রের গড়চিরোলি জেলার গয়রাবাট্টির ধানোরা তহশিলের অধীনে থাকা বিশাল জঙ্গলে নকশাল দমন অভিযান চালায় মহারাষ্ট্রের সি-৬০ শাখার পুলিশ বাহিনী। জঙ্গলের কিছুটচা ভিতরে যেতেই তাদের উপর গুলি চালায় নকশালরা। জবাবে পাল্টা গুলি চালায় পুলিশ বাহিনীও। দুপুর অবধি সংঘর্ষ চলে। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে মোট ২৬ জন নকশালের দেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ছত্তীসগঢ় থেকে নকশালপন্থীরা জঙ্গলের পথ ধরে গড়চিরোলিতে প্রবেশ করেছে প্রচুর সংখ্যক নকশাল, গোপন সূত্রে এই খবর পেতেই এ দিন সকালে জঙ্গলে প্রবেশ করে পুলিশের কম্যান্ডো বাহিনী। চিরুণী তল্লাশি চালিয়ে নকশালদের ঘাঁটিতে পৌঁছে যায় তাঁরা। এরপরই শুরু হয় গুলির লড়াই।
মুম্বই থেকে ৯০০ কিলোমিটার দূরে এই জেলায় এর আগেও নকশাল দমন অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। চলতি বছরের মে মাসেই গড়চিরোলির এটাপল্লী তহশিলের কোটমি জঙ্গলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় নকশালবাহিনীর। সেই অভিযানে ৭ মহিলা সহ মোট ১৩ জন নকশালপন্থীকে খতম করা হয়েছিল।
এ দিনও প্রায় একই প্রকারে নকশাল দমন অভিযানে নামে মহারাষ্ট্র পুলিশ। জানা গিয়েছে, মৃত ২৬ জন নকশালদের মধ্যে কুখ্যাত নকশাল নেতা মিলিন্দ তেলতুম্বডেও রয়েছে। উল্লেখ্য, ভীমা-কোরেগাঁও হিংসার ঘটনায় অন্য়তম অভিযুক্ত ছিল এই মিলিন্দ। এলগার পরিষদ-ভীমা কোরেগাঁও হিংসার ঘটনায় পুণে পুলিশ তাঁকে “ওয়ান্টেড” হিসাবে ঘোষণা করেছিল। দীর্ঘদিন ধরেই ছত্তীসগঢ় পুলিশও তাঁকে গ্রেফতার করার চেষ্টা চালাচ্ছিল, কিন্তু প্রতিবারই চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে যেত সে। তবে শনিবার মহারাষ্ট্র পুলিশের কম্যান্ডো বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে এঁটে উঠতে পারেনি সে, কম্যান্ডো বাহিনীর গুলিতেই সংঘর্ষস্থলে মারা যায় মিলিন্দ। সিপিআই(মাওবাদী)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যও ছিল ওই নকশাল নেতা।
গড়চিরোলির পুলিশ সুপারিন্ডেন্ট জানিয়েছেন, সকাল থেকে দুপুর অবধি দুই পক্ষের মধ্যে লাগাতার সংঘর্ষ চলেছে। তবে দিনের শেষে ২৬ জন নকশালপন্থীকে খতম করতে পেরে এই অভিযান দারুণভাবে সফল বলেই মনে করা হচ্ছে। তিনি জানান, নকশালদের সঙ্গে সংঘর্ষে যে তিনজন কম্যান্ডো আহত হয়েছেন, তাদের আকাশপথে নাগপুরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য।