গরুপাচার-কাণ্ডে ফের জামিন খারিজ অন্যতম মূল অভিযুক্ত এনামুলের।

আবেদন করেও ফের জামিন খারিজ গরুপাচার-কাণ্ডের অন্যতম মূল অভিযুক্ত এনামুল হকের।

বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে এনামুলের জামিনের আবেদন খারিজ করেন বিচারক অরিজিত্‍ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি বিভাস পট্টনায়কের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন, এনামুলের জামিনের পক্ষে সওয়াল করেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায়। এনামুলের আইনজীবীর তরফে বলা হয়, গরুপাচারকাণ্ডে এনামুল ছাড়া আর যাঁরা অভিযুক্ত ছিলেন, তাঁরা সকলেই নিম্ন আদালতে জামিনপ্রাপ্ত। তাহলে এনামুল কেন জামিন পাবেন না? বিশেষ করে যখন এনামুল সিবিআইকে তদন্তের জন্য সবরকমভাবে সাহায্য় করতে প্রস্তুত বলে নিজেই জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, সিবিআই অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল পাল্টা সওয়াল করে জানান, গোটা গরুপাচার-কাণ্ড একটি পরিকল্পনামাফিক পাচারকীর্তি। এত বড় চক্রের জাল ছড়িয়ে রয়েছে অনেক গভীরে। ফলে, মূল অভিযুক্ত এনামুলকে জামিন দিলে তদন্ত বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে এবং অভিযুক্ত সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন। তাতে এত বড় চক্রটির শিকড় পাকড়াও করতে তদন্তকারীদের সমস্যায় পড়তে হতে পারে।

উল্লেখ্য গত ১১ ডিসেম্বর, আসানসোলে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন এনামুল। আসানসোলের সিবিআইয়ের আদালতে ওইদিন সকালে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। কলকাতা থেকে সিবিআইয়ের একটি বিশেষ টিম যায় আদালতে। সম্প্রতি বিএসএফ জওয়ান সতীশ কুমারকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সেখান থেকে এনামুল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। বিএসএফ জওয়ান সতীশ কুমারকেও আসানসোল থেকে নিয়ে আসা হয়।

গরুপাচার কাণ্ডে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী এনামুল হককে। এর আগেও সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর কমান্ডান্টকে ঘুষ দেওয়ার ঘটনায় এনামুলকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। গ্রেফতারের পরে জামিনও পেয়েছিলেন তিনি। সূত্রের খবর, গরুপাচার-কাণ্ডে সতীশ ও এনামুলকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার কথাও ছিল তদন্তকারীদের।

গরু পাচার চক্রে উঠে আসা তথ্য দেখে বিস্মিত হয়েছিলেন তদন্তকারী সিবিআই অফিসাররাই। তাঁরা দাবি করেছিলেন, গরু পাচারের টাকায় এক দিকে যেমন সতীশ কুমারের মতো বিসএসএফ জওয়ান বিপুল লাভ করেছেন তেমনই এনামুলের মতো পাচারকারীরা কয়েকশো কোটি টাকার লেনদেন করেছে।

এনামুলের কলকাতার কয়েকটি ঠিকানা, আস্তানা এবং মুর্শিদাবাদের কয়েকটি স্থানে তল্লাশি চালানো হয়। সিবিআইয়ের দাবি, এনামুল গরু পাচারের পাশাপাশি চাল কল, আবাসন ও নির্মাণ শিল্প, পাথর খাদান, বালির কারবার-সহ একাধিক বেআইনি কারবারে যুক্ত। তাঁর একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ১০০ কোটির বেশি টাকা পাওয়া গিয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। এছাড়াও নামে-বেনামে বহু সম্পত্তির হদিশ পাওয়া গিয়েছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.