সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা উপনির্বাচনে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে বঙ্গ বিজেপির। চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে কীভাবে এতটা খারাপ ফল হতে পারে, তা নিয়ে পর্যালোচনায় বসেছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। আর এরই মধ্যে রাজধানীতে আয়োজিত হয়ে গেল বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক। বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতি।
জাতীয় কার্যসমিতির বৈঠকে রাজ্যগুলির বেশিরভাগ নেতাই ভার্চুয়ালি যোগ দিয়েছিলেন। হাতে গোনা কিছু নেতা দিল্লিতে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন। আর সেই সশরীরে উপস্থিতি নেতাদের তালিকায় ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষও। আজ বৈঠক শেষে দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, “প্রধানমন্ত্রী দলীয় নেতা-কর্মীদের উৎকর্ষতার সঙ্গে জনসংযোগের কথা বলেছেন। শুধুই রাজনীতি নয়, সামাজিক গুরুত্বের কথাও বিচার করতে হবে।”
দিলীপ বাবু আজ আরও জানিয়েছেন, “বাংলার হিংসা নিয়ে গোটা দেশ চিন্তিত। দলের নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে। গোয়া, তামিলনাড়ু ও মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন বাংলায় হিংসা যেন গোয়ায় না দেখা যায়। রাজনীতির মধ্যে হিংসা আসা উচিত নয়।”
বৈঠকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাও বাংলার ভোট পরবর্তী হিংসার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। জে পি নাড্ডা বাংলাকে নিয়ে আশার আলোর দেখছেন বলেও মনে করছেন দিলীপ ঘোষ। নাড্ডা জানিয়েছেন, “আইনি পদ্ধতিতে হিংসা দমন করে গণতান্ত্রিক উপায়ে বাংলায় সরকার গড়ব।”
উল্লেখ্য, বিজেপির রাজনৈতিক প্রস্তাবে একাধিক বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হলেও বাংলার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। পশিমবঙ্গে হিংসার কথা বলা হয়েছে এই প্রস্তাবে। অভিযোগ, বিজেপি কর্মীদের খুন থেকে মহিলাদের উপর অশালীন ব্যবহারের। রাজনৈতিক প্রস্তাবে একে “মানবতার উপর কালো দাগ ” বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিজেপি তার কর্মীদের সঙ্গে রয়েছে এবং দোষীদের শাস্তি দিয়ে ছাড়বে।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার যে অভিযোগ বার বার প্রকাশ্যে এসেছে, আজ সেই কথা আরও একবার উঠে আসে বিজেপির জাতীয় কার্যসমিতির বৈঠকে। জে পি নাড্ডা বলেন, “আমাদের ৫৩ জন কর্মী নিহত হয়েছেন। মানুষ এখনও সেখানে ভয়ে অন্য কোথাও গিয়ে লুকিয়ে রয়েছেন ।” সম্প্রতি বাংলায় শাসক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল বেছে বেছে দলের লোকেদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। আজ সেই ইস্যুতেও পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। এই ধরনের ঘটনার নিন্দা করেছেন তিনি। একইসঙ্গে বাংলার দলীয় নেতা ও কর্মীদের উজ্জীবিত করতে তাঁর বার্তা, “বাংলা ও রাজ্যের মানুষের উনয়নের জন্য আমরা আরও লড়াই করব।”