ত্রিপুরায় সম্প্রতি যে হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তার মোকাবিলায় এবার কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে ত্রিপুরা পুলিশ। হিংসা বিষয়ে টুইটারে ভুয়ো এবং বিকৃত খবর ছড়ানোর অভিযোগে এখনও পর্যন্ত মোট ১০২ টি টুইটার অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। আজ এমনটাই জানিয়েছেন ত্রিপুরা পুলিশের মুখ্য জন সংযোগ আধিকারিক জ্যোতিস্মান ডি চৌধুরী।
এই মামলার তদন্তভার ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই টুইটার অ্যাকাউন্টগুলির ব্যবহারকারীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
ত্রিপুরায় সম্প্রতি যে হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার বিস্তারিত রিপোর্ট জানতে চেয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। ত্রিপুরার মুখ্যসচিব এবং ত্রিপুরা পুলিশের ডিজিপিকে বিস্তারিত রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে মানবাধিকার কমিশন।
ত্রিপুরায় সাম্প্রতিক রাজনৈতিক হিংসা এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হিংসার যে অভিযোগগুলি প্রকাশ্যে আসছিল, সেগুলি তুলে ধরে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় মুখপাত্র তথা সমাজ কর্মী সাকে গোখলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ত্রিপুরার মুখ্যসচিব এবং ত্রিপুরা পুলিশের ডিজিপির থেকে রিপোর্ট তলব করেছে কমিশন।
তৃণমূল মুখপাত্র তাঁর অভিযোগে জানিয়েছিলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর সম্প্রতি হিংসার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসছিল, তা দেখার পরেও রাজ্য প্রশাসনের অবস্থান ছিল কার্যত হামলাকারীদের পাশে দাঁড়ানোর সমান। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই সাম্প্রদায়িক অস্থিরতার কারণে সেখানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে একটি আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপের দাবি করেছেন তিনি।
এর পাশাপাশি তাঁর আরও অভিযোগ, ত্রিপুরার শাসক দলের কর্মীরা তৃণমূলের রাজনৈতিক কর্মসূচির উপর হামলা চালাচ্ছে। এ রকমই এক রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় তৃণমূলের এক সাংসদ এবং বেশ কয়েকজন দলীয় কর্মী আক্রান্ত হয়েছে। তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, জিনিসপত্র চুরি করা হয়েছে।
সাকে গোখলের বক্তব্য, উত্তর ত্রিপুরায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে একটি সভা ও মিছিল করা হয়েছিল। সেই সময় সেখানকার ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের একটি প্রার্থনাস্থলে ভাঙচুর চালানো হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা এলাকার দুটি দোকানে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল।
অভিযোগের গুরুত্ব খতিয়ে দেখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এই অভিযোগের প্রতিলিপি ত্রিপুরার মুখ্যসচিব এবং ডিজিপির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন এবং কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা বিস্তারিত রিপোর্ট চার সপ্তাহের মধ্যে জমা করতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের তরফেও বিষয়টি নিয়ে কোনও নির্দেশ প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে কিনা, তাও উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। যদি কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়ে থাকে, তবে তার কপিও চার সপ্তাহের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে।