ফের উত্তপ্ত কাশ্মীর। জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরি জেলার খাবলানের জঙ্গলে চলছে সেনা অভিযান। ওই এলাকা থেকে গ্রামবাসীদের থেকে সেনা জওয়ানরা খবর পেয়েছিলেন খাবলানের জঙ্গলে বেশ কয়েকজন সশস্ত্র জঙ্গি গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। তাদের কাছে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র শস্ত্র রয়েছে বলেও গোপন সূত্রে খবর পান জওয়ানরা। সেই সূত্র ধরেই, আজ খাবলানের জঙ্গলে অভিযান শুরু করেছে সেনা।
জঙ্গিরা যাতে কোনওরকম নাশকতা চালাতে না পারে, বা অভিযান চলাকালীন যাতে সাধারণ নাগরিকের সমস্যায় না পড়ে, তার জন্য থানমান্ডি- রাজৌরি সংযোগকারী সড়ক আগে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গতকাল জম্মু ও কাশ্মীরের বেমিনা এলাকায় এক হাসপাতালে ঢোকার চেষ্টা করে সশস্ত্র জঙ্গিরা। হাসপাতালে প্রবেশের মুখেই মোতায়েন ছিলেন সেনা জওয়ানরা। জঙ্গিরা হাসপাতালে ঢুকতে গেলে তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর জওয়ানরা। শুরু হয় গুলির লড়াই। তবে সে গুলির লড়াই বেশিক্ষণ চলেনি। হাসপাতাল চত্বরে সেই সময় অনেক নিরপরাধ সাধারণ নাগরিক ছিলেন। সেই সুযোগ নিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যায় জঙ্গিরা। গোটা হাসপাতাল চত্বরকে ঘিরে ফেলা হয়েছে কড়া নিরাপত্তা বলয়ে। ওই হামলার ঘটনায় একজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। জখম ওই ব্যক্তিকে হাসাপাতালে ভরতি করা হয়েছে।
১১ অক্টোবর থেকেই লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের খুঁজে বের করতে উপত্যকাতে ব্যাপকভাবে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা জওয়ানরা। জম্মু ও কাশ্মীরের সীমান্ত জেলা পুঞ্চ এবং রাজৌরিতে বেশি মাত্রায় এই অভিযান চলছে।
জঙ্গিদের অস্ত্রসস্ত্র ব্যবহার ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সাহায্য করে পাকিস্তান। এই অভিযোগ অনেক পুরানো। এই নিয়ে কিছুদিন আগেই পাকিস্তানকে নিশানা করেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে বারবার চেষ্টা করেও কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে কোনও সমর্থন আদায় করতে পারেনি পাকিস্তান। তিনি আরও বলেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অভিযানের সংজ্ঞা বদলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেসকে নিশানা করে রাজনাথ বলেন “মনে করে দেখুন আগের সরকারের সময়ে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কেমন নরম মনোভাব ছিল। জঙ্গি হানা ঘটলে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলিকে লঘু করা হত, এতে জঙ্গিরাই লাভবান হত। বর্তমানে সেই পরিস্থিতি বদলেছে।”
উল্লেখ্য, একের পর এক জঙ্গি হানায় উত্তপ্ত পরিস্থিতিতেই তিন দিনের কাশ্মীর সফরে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ৩৭০ ধারা অবলুপ্তির পর সেটাই ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রথম কাশ্মীর সফর। কাশ্মীরে পৌঁছেই একের পর এক জঙ্গি হানা, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আস্ফালন, জঙ্গি হানায় নাগরিকদের মৃত্যু, সীমান্তবর্তী এলাকায় বেআইনি অনুপ্রবেশ সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে পৌরহিত্য করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।