বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের আড়বেলিয়া বেনে পাড়ায় মজুমদার বাড়ি। আড়বেলিয়া এলাকাটি সুপ্রাচীন, বহু শিক্ষিত ও বনেদি পরিবারের বাস। এর মধ্যে আড়বেলিয়ার বসু বাড়ি ও মজুমদার বাড়ি বিখ্যাত।
আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে মজুমদার বাড়িতে কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। কথিত আছে, যশোহরের রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজত্বের শেষদিকে যখন রাজত্বে বিশৃঙ্খল অবস্থা। সেই সময় রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজত্বের দেওয়ান ছিল আড়বেলিয়ার এই মজুমদার পরিবারের পূর্বশূরী এক বংশধর। রাজা প্রতাপাদিত্যের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত যশোহরের বিখ্যাত যে কালী মন্দির যা যশোরেশ্বরী নামে খ্যাত, এই যশোরেশ্বরী কালীমাতা দ্বারা মজুমদার পরিবারের ওই পুরুষ স্বপ্নে আদেশ পান, “আমাকে এখান থেকে তুই নিয়ে চল, এখানে আমি থাকতে পারছিনা।” দেবীর নির্দেশ মতো তিনি মন্দিরের দেবী ঘট (তামার) ও মায়ের হাতের খাঁড়া নিয়ে যশোহর ত্যাগ করেন।
একটি খড়ের চালা ঘরে দেবীর ঘট স্থাপন করে পুরোহিতকে দিয়ে পুজো শুরু করেন। দেবী স্বপ্নাদেশ দেন মন্দিরে যেন কোনও বিগ্রহ বা প্রতিমা স্থাপন না করা হয়। সেই থেকে আজ অবধি বিনা বিগ্রহে কেবলমাত্র ঘটে এই মন্দিরে কালীমাতার পূজা অর্চনা চলে আসছে।
বর্তমানে মন্দিরে একটি বেদীর উপর কাঠের বড়ো সিংহাসন ও রুপার খাটে দেবীর তামার ঘট প্রতিষ্ঠিত আছে। মজুমদার পরিবারের সদস্যরা জানান, এই মজুমদার পরিবারে ভিটায় প্রতিমা সহযোগে কোনওরকম পূজা অর্চনা করা নিষেধ। এমনকি কোনরকম দেবদেবীর ক্যালেন্ডার এই পরিবারের ঘরে টানানো যাবেনা। এই বিধান সেই প্রাচীনকাল থেকে চলে আসছে।
মজুমদার পরিবারের বর্তমান জানান, প্রতি বছর কার্তিক মাসে আড়ম্বরপূর্ণ ভাবে মন্দিরে পূজা হয়। পাশাপাশি আড়বেলিয়া গ্রামে কোন কালীপূজা করতে হলে প্রথমে এই মন্দিরে পূজা উৎসর্গ করে তবেই কালীপূজা করতে হবে।