রেশন বিলি করতে গিয়ে হল বিপত্তি। গ্রাহকের কাছে মার খেলেন খোদ রেশন ডিলার। কিন্তু ঘটনার কারণ শুনে অবাক সকলে।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে আমডাঙার কাছে বড়গাছিয়া গ্রামে রেশন বিলি করতে যান মহম্মদ ইজরাইল নামে ওই রেশন ডিলার। সরকারি নির্দেশ মতো গ্রামের প্রায় তিরিশ থেকে চল্লিশ পরিবারের বাড়িতে গিয়ে রেশন পৌঁছে দিচ্ছিলেন তিনি। তবে কোনওভাবে সার্ভার ডাউন থাকায় রেশন বিলি করতে সামান্য় দেরি হয়ে যায় ওই ডিলারের।
ব্যাস, এরপরই রাগ উঠে যায় গ্রাহকের। অভিযোগ বড় গাছিয়া গ্রামের বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম চডাও হয় রেশন ডিলারের উপর। রেশন দিতে কেন দেরি হচ্ছে তা জানতে চেয়ে বেধড়ক মারধর করেন।
এরপর গতকাল সন্ধে নাগাদ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আমডাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন রেশন ডিলার মহম্মদ ইজরাইল। ঘটনার পর থেকেই রেশন ডিলাররা তাঁদের নিরাপত্তার দাবিতে সরব হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে দুয়ারে রেশনের পাইলট প্রজেক্ট। এদিন থেকে সারা বাংলায় পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে ১৫ শতাংশ দোকানে শুরু হবে দুয়ারে রেশন। খাদ্য দফতরের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয় পাইলট প্রজেক্ট চলাকালীন ক্লাস্টার ভাগ করে প্রতি মাসে, প্রতি সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে রেশন দেওয়া হবে। প্রতি মাসের রেশন একবারেই পেয়ে যাবেন উপভোক্তারা।
তবে শুরু আগে একাধিক বিষয়ে অভিযোগ তুলে সোজা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন রেশন ডিলাররা। দুয়ারে রেশন দেওয়ার বিরুদ্ধেই সরব হয়ে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাকারী রেশন ডিলারদের দাবি, রাজ্য সরকারের দুয়ারে রেশন প্রকল্প কেন্দ্রীয় রেশন বণ্টন আইনের পরিপন্থী। প্রকল্পটি একাধারে খরচ সাপেক্ষ। সেই সঙ্গে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যে পরিমাণ অর্থ, যে কর্মচারী সঙ্কুলান প্রয়োজন, সেটাও অধিকাংশ রেশন ডিলারদের কাছে নেই। এই প্রকল্পের কোনও বিজ্ঞপ্তি জারি করাও হয়নি বলে দাবি করেছেন ডিলাররা।
এখানেই শেষ নয়, মামলাকারী রেশন ডিলাররা আরও দাবি করেছেন, বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়া আইন বিরুদ্ধ। সেই পরিকাঠামো রেশন ডিলারদের নেই বলে দাবি মামলাকারীদের। ডিলারদের দাবি, আইন অনুযায়ী রেশন প্রাপক দোকানে এসে রেশন নেবেন, এটাই নিয়ম।
রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়ার জন্য ডিলারদেরই গাড়ির খরচ, প্রচারের খরচ এবং সংরক্ষণের খরচ বহন করতে হবে। দায়ের হওয়া মামলায় ডিলাররা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এই বিপুল খরচ তাঁরা বহন করতে পারবেন না।
পরে অর্থাৎ ১৫ সেপ্টেম্বর বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়ার যে প্রকল্প রাজ্য চালু করেছে তাতে সীলমোহর দেয় আদালত। তাদের সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা।