প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর তৈরির লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ এবং প্রতারণার অভিযোগে বসিরহাট পুরসভার এক অস্থায়ী কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিস। ধৃতের নাম মসিবর রহমান। ধৃত বসিরহাটের দন্ডিরহাট এলাকার বাসিন্দা। মঙ্গলবার রাতে তাকে দন্ডিরহাট এলাকা থেকেই গ্রেফতার করা হয়।
বছর তিনেক আগে বসিরহাট পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি এবং কাটমানির অভিযোগ ওঠে। ঘটনাটি নিয়ে মারধর, হুমকি এমনকি ব্যাঙ্কের পাসবই আটকে রাখারও অভিযোগ ওঠে বসিরহাট পুরসভার তৎকালীন পুরপ্রধান ঘনিষ্ঠ মসিবরের নামে। কিন্তু তখন তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। এলাকার মানুষের অভিযোগ, অভিযুক্ত প্রকাশ্যে ঘুরে বেরিয়ে হুমকি পর্যন্ত দিয়ে যাচ্ছিল। তবে দেরিতে হলেও শেষপর্যন্ত অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ায় খুশি অভিযোগকারীরা। এই মামলায় পুলিসের তদন্তকারী অফিসারের দাবি, পালিয়ে বেড়ানোর কারণে ধরা যাচ্ছিল না মসিবরকে। এদিন এলাকাতে এসেছে জানতে পেরেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল সর্দার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমার নামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর বরাদ্দ হয়। ব্যাঙ্কে টাকাও আসে। কিন্তু পাসবই কেড়ে নেওয়ায় সেই টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। তৎকালীন পুরপ্রধানের কাছে অভিযোগ করলে তাঁর সামনেই আমাকে মারধর করা হয়। ’’বৃদ্ধা সুমিত্রা বিশ্বাসও বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক পাসবই দেয়। কিন্তু প্রাক্তন পুরপ্রধানের ঘনিষ্ঠ মসিবর সই করে নিলেও ব্যাঙ্কের বই এবং টাকা কিছুই দেয়নি। ঘরও অর্ধেক হয়ে পড়ে আছে। ’’হাবিবুল্লা সর্দার বলেন,‘‘ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারি আমাদের প্রাপ্য টাকার অর্ধেকের বেশি নিয়ে নেওয়া হয়েছে, অথচ ঘর অসমাপ্ত হয়ে পড়ে রয়েছে। ঘরের নামে দরজা,জানলাবিহীন একটা কাঠামো খাড়া করে মসিবর সকলের পাসবই আটকে রেখেছে। ঘর তৈরির কথা বললে হুমকি দেয়।’’
যদিও ধৃত মসিবরের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতার প্রসঙ্গে বসিরহাট পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তপন সরকারের দাবি,‘‘আমার সাথে মসিবরের কোনও সম্পর্ক নেই। কেউ রাজনৈতিকভাবে ষড়যন্ত্র করে আমার বদনাম করতে চাইছে। ’’এ বিষয়ে বসিরহাট দক্ষিণের বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। অপরাধ করলে কেউ রেহাই পাবে না। ’’ ওদিকে অভিযুক্ত মসিবর রহমান দাবি করেছেন, তাঁকে পরিকল্পনা করে ফাঁসানো হয়েছে। বুধবার বসিরহাটের এসিজেএমের আদালতে তোলা হলে বিচারক মসিবরকে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজাতের নির্দেশ দেন।