অবশেষে প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন সফল হলো। প্রশিক্ষিত ও প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। শুক্রবার এই ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিল নবান্ন।
বৃহস্পতিবার নজরুল মঞ্চে প্রাথমিক শিক্ষকদের অনুষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, ইতিমধ্যেই সরকার গ্রেড পে ৩২০০ টাকা করার সুপারিশ করেছে অর্থমন্ত্রকের কাছে। চেষ্টা করা হচ্ছে সেটা আরও বাড়িয়ে ৩৬০০ টাকা করা যায় কিনা। এ দিন নির্দেশিকা জারি করে সরকার জানিয়ে দিল, প্রশিক্ষিত প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড পে ২৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৬০০ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রশিক্ষিতরা চাকরির শুরুতে পাবেন ২৫ হাজার ৫০০ টাকা। আগে তাঁরা পেতেন ১৯ হাজার টাকা। প্রশিক্ষণহীন প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড পে ২৩০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৯০০ টাকা। অগস্ট মাস থেকেই এই নতুন গ্রেড পে কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে নবান্ন।
অবশ্য সরকারের তরফে এই ঘোষণার পরেও এই ব্যাপারে এখনও কোনও বিবৃতি দেননি অনশনরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে, তাঁরা নির্দেশের কপি পেয়েছেন। নিজেদের মধ্যে আলোচনার পরেই এই বিষয়ে বিবৃতি দেবেন তাঁরা। সরকারের এই নির্দেশের পরে তাঁরা অনশন তুলে নেবেন কিনা, সে ব্যাপারেও এখনও কিছু জানানো হয়নি।
এনসিটিই-র নতুন নির্দেশ মতো রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা মানা হলেও সেই অনুসারে উপযুক্ত বেতন পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ প্রাথমিক শিক্ষকদের। আন্দোলনকারীদের দাবি, যেখানে সারা ভারতের সমস্ত রাজ্যে গ্রেড পে ৪,২০০ টাকা, সেখানে এ রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড পে ২,৬০০ টাকা। এই বৈষম্যের প্রতিবাদে আন্দোলনে সামিল হন তাঁরা। তাঁদের আরও অভিযোগ, বেআইনিভাবে ১৪জন শিক্ষককে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশিকাতেও বদল আনতে হবে।
বিধাননগরে গত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে অনশন আন্দোলন চালাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা। তাদের সংগঠনের দীর্ঘদিনের দাবি, রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষকদের সর্বভারতীয় হারে বেতন দিতে হবে। এর আগে শিক্ষামন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা করে মৌখিক আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও তাঁরা আন্দোলন থামাননি। বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের পরেও আন্দোলন চালু রেখেছেন তাঁরা। এ বার দেখার বেতন বৃদ্ধির নির্দেশিকা জারির পর তাঁরা কী সিদ্ধান্ত নেন।