কলকাতা ফুটবল ময়দানে নজির গড়ল ইস্টবেঙ্গল। সন্তোষ ট্রফির জন্য যাতে শক্তিশালী বাংলা দল গড়া যায়, তার জন্য আইএফএ-কে আর্থিক সাহায্য করবে তারা। রাজ্যের ফুটবল দল তৈরি করার জন্য কোনও ক্লাবের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য করার ঘটনা সম্ভবত এই প্রথম।
গত শুক্রবার ইস্টবেঙ্গলের পক্ষ থেকে আইএফএ-কে প্রথমে ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। তারপর সোমবার আরও ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, জাতীয় মহিলা ফুটবল প্রতিযোগিতার সময় বাংলার মহিলা দলের জন্যও ২ লক্ষ টাকা দেবে ইস্টবেঙ্গল।
ক্লাবের পক্ষ থেকে সহ-সচিব রূপক সাহা জানালেন, ‘‘এই বছর একেবারে শুরু থেকেই ভাল দল তৈরি করার জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে আইএফএ। তবে দুই বছর ধরে চলতে থাকা অতিমারির কারণে সব ক্ষেত্রেই আর্থিক মন্দার ছায়া পড়েছে। আইএফএ-ও তার ব্যতিক্রম নয়। আমরাও আর্থিক সঙ্কটে রয়েছি। সেখান থেকে বেরোবার চেষ্টা করছি। তবুও বাংলার সন্তোষ ট্রফি দলের পাশে আমরা থাকতে চাইছি। সেই কারণে দুই দফায় আমরা ২ লক্ষ টাকা দিয়েছি আইএফএ-কে। জাতীয় মহিলা ফুটবলের সময় বাংলার মহিলা ফুটবল দলের জন্যও ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।’’
এমনিতে সন্তোষ ট্রফির সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের একটা আলাদা আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। সন্তোষের মহারাজা মন্মথনাথ রায়চৌধুরী ইস্টবেঙ্গলের জন্মের সময় থেকেই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ক্লাবের যাবতীয় পরিকাঠামোই তাঁর এবং বনোয়ারীলাল রায়ের দেওয়া টাকায় তৈরি হয়েছিল। আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পরে ব্রিটিশদের রক্তচক্ষুকে পাত্তা না দিয়ে ১৯২৪ সালে মূলত তাঁর উদ্যোগেই ইস্টবেঙ্গল স্যার আশুতোষের মূর্তি বসায়। এই মূর্তি আজও ধর্মতলার ভিক্টরিয়া হাউসের সামনে রয়েছে।
১৯২৫ থেকে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত, এই দীর্ঘ ১১ বছর সন্তোষের মহারাজা মন্মথনাথ রায়চৌধুরী ছিলেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সভাপতি। ১৯৩০ থেকে ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন আইএফএ-র সভাপতি। ১৯৩৭ সালে সন্তোষের মহারাজা এবং ইস্টবেঙ্গলের পৃষ্ঠপোষক দ্বারভাঙার মহারাজা স্যার কমলেশ্বর সিংহ গৌতমের উদ্যোগে সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন বা এআইএফএফ গড়ে উঠেছিল।
তাঁর নামেই দেশের জাতীয় ফুটবল প্রতিযোগিতা সন্তোষ ট্রফি অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিযোগিতায় বরাবরই বাংলার দাপট ছিল। এখনও পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতায় বাংলা ৩২ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ধারেকাছে কেউ নেই। এরপর সবথেকে বেশি আটবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পঞ্জাব।