বামপন্থী সেই পরমব্রত যেদিন অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করতে কলকাতা থেকে রওনা হয়েছিলেন সেদিনই বুঝেছিলাম বিক্রি বাটরার পর্ব শুরু হয়েছে

ডুবে ডুবে জল খাচ্ছিলেন অনেকদিন, পরমব্রত । পরমব্রত চ্যাটার্জি । অভিনেতা । নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত মুখ । ভাবনায়, চিন্তায় পুরো মাত্রায় বামপন্থী । বামপন্থী ঘরানার ও পরিবারের বৃত্তে তাঁর বড় হওয়া, বেড়ে ওঠা । আনন্দবাজারের কোটায় তৈরি বুদ্ধিজীবী, উত্তর সম্পাদকীয় লেখক । ইনিয়ে বিনিয়ে নানান কায়দায় হিন্দুত্ববাদীদের বিরোধিতায় সিদ্ধ মস্তিষ্ক । কলমেই ধার আছে । আনন্দবাজারের ফিলোসফির সঙ্গে মেলে বলে আনন্দবাজার কাজে লাগায় । কলমের গোড়ায় হিন্দু মৌলবাদ নিয়ে কালি বেরোলেও ইসলামিক মৌলবাদ নিয়ে অদ্ভুত ভাবে নীরব, মৌন । বাম আঁতলামির অঙ্গ যা ।

সেই পরমব্রত যেদিন অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করতে কলকাতা থেকে রওনা হয়েছিলেন সেদিনই বুঝেছিলাম বিক্রি বাটরার পর্ব শুরু হয়েছে । অনুব্রতর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে বিগলিত পরমব্রতর বাইট নিয়েছিল বাংলা সংবাদ মাধ্যম ।

এক সাংবাদিক বন্ধুকে প্রশ্ন করায় বলেছিলেন মমতা কিনছেন ওকে । মিলিয়ে নিও । কিভাবে ? অঙ্ক অনেক গভীরে । কিন্তু তাই বলে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে সিটিং ? শঙ্খ ঘোষেকেও যে লোকটি ছাড়েনি তার সঙ্গে পরমব্রত ? বন্ধুটির সংক্ষিপ্ত উত্তর ছিল – অপেক্ষা কর ।

সপ্তাহ তিনের আগের কথা এসব । অপেক্ষা করে আজ বুঝলাম অঙ্কটা ঠিক কোথায় । কিভাবে ।
কয়লা খনি প্রকল্পে ডেউচায় রাজ্য সরকারের কমিটির নেতৃত্বে পেলেন পরমব্রত । সঙ্গে আরও অনেকে ।

বীরভূমের মোহাম্মদ বাজারের ব্লকের ৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১ টি মৌজায় মাটির নীচে সঞ্চিত ২১০ কোটি টন কয়লা একক ভাবে তোলার অধিকার পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ । সেই এলাকার অধিবাসীদের উচ্ছেদ ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব ও ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব থাকবে এই কমিটির । অনেক কোটির গল্প । রাজ্যের ।

পরমব্রতরা সাম্মানিক পাবেন এই কাজের ? সেই সাংবাদিক বন্ধুটি আজ বললেন – ভালো পরিমান । কত ? কিরকম ? বললেন – “এঁরা কি পাবেন জানিনা । তবে মাথা ঘোরানো অঙ্ক হবে । অনুমেয় ।” হওয়ারই কথা । এত গুরুত্বপূর্ন একটা কাজ । হবেনাই বা কেন । দায়িত্ব পেয়েই বিগলিত পরমব্রতর নাল ঝরতে শুরু করেছে – রাজ্য সরকার অত্যন্ত দূরদর্শী ও মানবিক ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ ঠিক করেছে ।

বন্ধুটির ফোন রেখে আজ রাতে ভাবছিলাম ।

আনন্দবাজারের উত্তর সম্পাদকীয় লেখা আরও এক কৃতি মানুষের মুখ অজান্তেই ভেসে এল ।

অভিরুপ সরকার, অধ্যাপনা করেন । মমতার অনুপ্রাণিত অর্থনীতিবিদ । তাঁকেও এরকম পে কমিশনের মাথায় বসিয়ে বছরের পর বছর বিলম্বিত করেছেন পে কমিশনের রিপোর্ট । অন্য দিকে আদালতে গিয়ে ডি এ আটকাতে অকাতরে ব্যয় করেছেন কোটি কোটি টাকা । অভিরূপ সরকার দেখেছেন সব । বুঝেছেন তাঁকে সামনে রেখে মমতা সরকারি কর্মচারীদের সর্বনাশ করে যাচ্ছেন । কোনোদিন ভুলেও করেননি প্রতিবাদ । করবেনই বা কেন ?

এঁদের সাথে আছে সরকার, সঙ্গে আছে আনন্দবাজার ।

প্রতিবাদ ? কেন কি দরকার ? পে কমিশনের পদাধিকার, ডেউচা কমিটির চেয়ার । এ জীবনে অনেক বেশী দরকার । নয় কি ?

কি বলেন বাঙালি ?

সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় (৯৮৩০৪২৬০৭৮)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.