তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি।
তোমার সেবার মহান দুঃখ সহিবারে দাও ভকতি ॥
আমি তাই চাই ভরিয়া পরান দুঃখের সাথে দুঃখের ত্রাণ,
তোমার হাতের বেদনার দান এড়ায়ে চাহি না মুকতি।
দুখ হবে মম মাথার ভূষণ সাথে যদি দাও ভকতি ॥
বিশ্বের সবথেকে উঁচু স্থানে হওয়া যুদ্ধগুলির মধ্যে অন্যতম কারগিল যুদ্ধ। এই লড়াইয়ে ভারতের অন্তত ৫৩৭ জন জওয়ান শহিদ হন। আর আহত হন প্রায় ১৩৬৩ জন জওয়ান।
প্রায় দুই লক্ষ সেনার উপর ‘অপারেশন বিজয়’-এর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কারগিলে মোতায়েন ছিলেন প্রায় ৩০,০০০ ভারতীয় জওয়ান।
অনুপ্রবেশকারীদের নিকেশের পর ভারতীয় সেনা যখন তাদের তল্লাশি চালায়, প্রত্যেকের কাছ থেকে পাকিস্তানের পরিচয়পত্র পাওয়া যায়।
পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, কারগিল যুদ্ধে সে দেশের ৩৫৭ জন সৈনিকের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় সেনার তদন্তে অন্য তথ্য উঠে এসেছিল।
তিন হাজারেরও বেশি পাকি সেনাকে জান্নাতের রাস্তা দেখানো হয় । যাঁদের বেশিরভাগই পাকিস্তানের প্যারা মিলিটারি ফোর্সের জওয়ান ছিল। ১৯৯৯ সালের পর এঁদের রেগুলার রেজিমেন্টে শামিল করা হয়।
কার্গিল যুদ্ধ বা কার্গিল সংঘর্ষ ১৯৯৯ সালের মে-জুলাই মাসে কাশ্মীরের কার্গিল জেলায় ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘটিত একটি সশস্ত্র সংঘর্ষ। পাকিস্তানি ফৌজ ও কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীরা উভয় রাষ্ট্রের মধ্যে ডি ফ্যাক্টো সীমান্তরেখা হিসেবে পরিচিত নিয়ন্ত্রণ রেখা বা লাইন অফ কন্ট্রোল পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়লে এই যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে।
যুদ্ধ চলাকালীন ও যুদ্ধের অব্যবহিত পরে পাকিস্তান এই যুদ্ধের দায় সম্পূর্ণত কাশ্মীরি জঙ্গিদের উপর চাপিয়ে দেয়। তবে যুদ্ধের পর ফেলে যাওয়া তথ্যপ্রমাণ এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানের পরবর্তীকালের বিবৃতি থেকে স্পষ্টতই জানা যায় যে পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনীও এই যুদ্ধের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। এই বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন জেনারেল আশরাফ রাশিদ।
কারগিল যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ১৯৯৯ সালের ২৮ মার্চ তৎকালীন পাক সেনা প্রধান পারভেজ মুশারফ নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। আর ভারতে নাকি এক রাত কাটিয়েও গিয়েছিলেন।
১৯৯৮ সাল থেকেই কারগিলে অনুপ্রবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পাক সেনা। প্রায় ৫০০০ জওয়ানকে কারগিলে প্রবেশের জন্য পাঠিয়েছিলেন মুশারফ। ভারত-পাকিস্তান দুই দেশই তখন পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ছিল। যুদ্ধে পিছিয়ে পড়ে ভারতের বিরুদ্ধে নাকি পারমাণবিক শক্তি প্রয়োগের পরামর্শও দিয়েছিলেন সেনা প্রধান মুশারফ।
ভারত যাতে এই যুদ্ধে পাকিস্তানের সঙ্গে পেরে উঠতে না পারে তার জন্য পাক বাহিনীর পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছিল চীনা সেনার আর্টিলারি বাহিনীও।
কারগিল যুদ্ধের সময় ভারতীয় এয়ারফোর্সের ‘সফেদ সাগর’ অপারেশন খুবই কার্যকর ছিল। প্রথমবার এই যুদ্ধেই ভারত ৩২০০০ ফুট উচ্চতা থেকে যুদ্ধবিমান ব্যবহার করেছিল। এত উচ্চতায় পরিস্থিতি এতটাই প্রতিকূল হয় যে, প্রশিক্ষিত পাইলটেরও বিমানের ভিতর দম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কারগিল যুদ্ধে প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার গোলাগুলি ও রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছিল।
শেষে ১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী কারগিল যুদ্ধের ইতি ঘোষণা করেন। ঘোষণা করেন ভারতের এই বিজয় দিবসের।
কার্গিল যুদ্ধে দুর্বুদ্ধিজীবীরা তাদের ব্যাপক কর্মকাণ্ড দেখিয়েছিল ।পশ্চিমবঙ্গ তো তখন বাম রাজনীতির ক্ষুধিত পাষাণে বন্দি।
যখন আমাদের দেশের সৈন্যবাহিনী জীবন পন রেখে লড়াই করছে পাকিস্তানি হানাদারের বিরুদ্ধে ,তখন এই দুরবুদ্ধিজীবীরা নানারকম বোলচাল আরম্ভ করে দিয়েছিল। সাধারণ লোকে এরকম কথা বললে তাদের হেটো লোকের উৎপটাং কথা বলে উড়িয়ে দেওয়া যায়। তাতে হেটো মানুষ কিছু মনে করতো না ।কারণ তার মাথায় এত বুদ্ধি নেই ,তাই বলার পিছনে কোন উদ্দেশ্য নেই, নেহাতই বলবার জন্য বলেছে।
কিন্তু দূরবুদ্ধিজীবীরা তো আর হেঁটো non intellectual নন।
তাদের নামের পিছনে গুছিয়ে রয়েছে কিছু ডিগ্রী। তাদেরকে আবার লোকের সর্বহারা নেতা বলেছে। আবার তারাই সর্বহারা নেতা হয়ে বুর্জোয়া স্টাইলে জীবন-যাপন করে । প্রলেতারিয়েতদের খরচে বহুবার বিদেশে গিয়েছে । ভোগ বিলাসে অতিবাহিত করেছে।
দূরবুদ্ধিজীবীরা বিনা উদ্দেশ্যে কোনো কাজ করে না। তারা কূটনৈতিক তর্ক তুলে,তাতে তার পরিষ্কার উদ্দেশ্য সাধারণ মানুষের মনে যুদ্ধ প্রচেষ্টা সম্পর্কে সন্দিহান করে তোলা । দেশের মানুষের মধ্যে অবান্তর ব্যাপারে একে অপরের বিরুদ্ধে মনকষাকষি তৈরি করা ।আমাদের দেশের ঐতিহ্যকে ,আমাদের দেশের সাফল্যকে খাটো করে দেখানো । আমাদের ক্ষয়ক্ষতি কে বড় করে দেখানো। সে ইতিহাস বললে কয়েকটি
পর্ব হয়ে যাবে।
দিন আসে দিন চলে যায়! আনুষ্ঠানিকতায়, পালা-পার্বনে, উৎসবে-স্মরণে পালিত হয় দিবস। থেকে যায় স্মৃতি। শুধু আচারে নয়- চেতনায় যদি ধারন করতে পারি সেই প্রকৃত মৌলিক আবেদনকে- তবেই তা আমাদের শিক্ষা, অভিজ্ঞতা, ভবিষ্যত পথ চলার দিশারী হয়ে আমাদের চালিত করে।
আমাদের সংগ্রাম সবসময়ই ছিল অন্যায়, অবিচার, অনাচার, শোষন, জুলুম আর স্বৈরাচারিতার বিরুদ্ধে। তা সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ মোড়কে হোক বা ইসলামের দোহাই দেয়া পাকি মোড়কে হোক। অথবা বর্তমানের সীমিত গণতন্ত্রের নামের মুসলিম তোষণ কারী জিহাদি স্বৈরাচারের মোড়কে হোক। সে লড়াইয়ে যারাই অংশ নেয় নিয়েছে বরণ করেছে, করতে হয়েছে মৃত্যু, গুম, খুন, ক্রশফায়ার, জেল জুলুম, হুলিয়া, দেশত্যাগ সহ মানবিয় যত বিপত্তি তৈরী করা সম্ভব সে সবের মোকাবেলা করেই।
আমরা গর্বের সাথে তাই বিজয় দিবস যেমন পালন করব। ঠিক তেমন করেই এই শহীদ দের ত্যাগ কে বিফলে যেতে দেব না।
#দুর্গেশনন্দিনী
তথ্যঃ
Government of India site mentioning the Indian casualties, Statewise break up of Indian casualties statement from Indian Parliament
↑ “Breakdown of casualties into Officers, JCOs, and Other Ranks”
↑ “Complete Roll of Honour of Indian Army’s Killed in Action during Op Vijay”