উত্তর-পূর্বে নজর চিনের, অসমের ফরওয়ার্ড পোস্টে রকেট লঞ্চার মজুত করছে সেনা।

লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সীমান্ত সমস্যা এখনও মেটেনি। আর এরই মধ্যে উত্তর পূর্ব ভারতের উপর, বিশেষ করে অরুণাচল প্রদেশের একটি বিস্তীর্ণ এলাকার উপর চিন আবারও নিজের প্রতিপত্তি দেখানোর চেষ্টা শুরু করেছে। আর তাই এবার আরও সজাগ ভারতীয় সেনা। উত্তর পূর্বে চিন সীমান্ত লাগোয়া বিভিন্ন ফরওয়ার্ড পোস্টে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অসমের এক ফরওয়ার্ড পোস্টে পিনাকা এবং সেমার্চ রকেট লঞ্চার মজুত করছে সেনা।

শত্রুঘাঁটিতে চোখের নিমেষে অব্যর্থ নিশানা হানতে সক্ষম পিনাকা। প্রমাণ সমুদ্রপৃষ্ঠে ৩৮ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত শত্রুপক্ষের যুদ্ধবিমানকে কাবু করতে পারে পিনাকা। আর উঁচু পাহাড়ি এলাকায় সেই দূরত্ব আরও অনেকটা বেড়ে যায়। মাত্র ৪৪ সেকেন্ডে ৭২ টি রকেট নিক্ষেপ করতে পারে পিনাকা। উত্তর পূর্বে মোতায়েন ব্যাটারি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারথ জানিয়েছেন, “খুব কম সময়ের ব্য়বধানে এই ব্যালেস্টিক রকেট লঞ্চার দিয়ে শত্রুপক্ষের উপর আঘাত হানা যায়।”

সীমান্তে চিনের কার্যকলাপ ভারতের জন্য বরাবরই উদ্বেগের। বিশেষত গালোয়ানে সংঘর্ষের পর থেকে বারবার চিনের উস্কানিমূলক কার্যকলাপ সামনে এসেছে বারবার। তবে ভারত এবার আরও সতর্ক। অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে  ভারতীয় সেনার  বিমানঘাঁটিতে এখন নতুন ও উন্নততর সমরসজ্জা। চিনের কার্যকলাপে এবার কড়া নজরদারি চালাতে পারবে ভারত।

স্পর্শকাতর ওই সীমান্তে ভারতের নজরদারিতে সাহায্য করছে অত্যাধুনিক হেরন ড্রোন। ইজরায়েলের তৈরি এই ড্রোনের সাহায্যে চিনের সীমান্তে যে কোনও কার্যকলাপেই এবার নজর রাখতে পারবে ভারতীয় সেনা। অনেক বেশি উচ্চতায় উড়তে পারে সেই ড্রোন। সেনা ঘাঁটি থেকে চালানো হচ্ছে বিশেষ নজরদারি।

শুধু হেরন নয়, সেনা ঘাঁটিতে এএলএইচ ধ্রুব, রুদ্র-র মতো হেলিকপ্টারও ভারতের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যে কোনও সময় চিনের মুখোমুখি হতে হলে সেনাবাহিলী যাতে প্রস্তুত থাকে, সেই ব্যবস্থাই রাখা হয়েছে। তবে হেরন ড্রোনের সাহায্যে বিশেষ সুবিধা হয়েছে ভারতের। ইজরায়েলের তৈরি এই হেরন ড্রোন সম্পর্কে মেজর কার্তিক গর্গ জানিয়েছেন, নজরদারির ক্ষেত্রে এই ড্রোন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভারতের হাতে আসার পর থেকে এই ড্রোনের ওপর ভরসা বেড়েছে অনেকটাই। তিনি জানান, এই ড্রোন আকাশে ৩০ হাজার ফুট উচ্চতা পর্যন্ত উড়তে সক্ষম। সেই উচ্চতা থেকে চারপাশের ছবি তুলতে পারে এই ড্রোন। সেনাবাহিনীর হাতে থাকবে সেই ছবি। একটানা ২৪ থেকে ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত ছবি আকাশে উড়তে পারে এটি। মেজর আরও জানান, খারাপ আবহাওয়াতেও যাতে নজরদারি বন্ধ না হয়, তার জন্য রয়েছে বিশেষ ক্যামেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.