বাংলাদেশে হিন্দুদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনায় রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপের আর্জি জানাল ইসকন কলকাতা। হিংসা-কবলিত জায়গায় প্রতিনিধিদল পাঠানোর আর্জি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হস্তক্ষেপের দাবি করেছে ইসকন কলকাতা কর্তৃপক্ষ।
শনিবার রাষ্ট্রসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্টনিও গুটারেসকে লেখা চিঠিতে কলকাতার ইসকনের তরফে বলা হয়েছে, ‘হিন্দু-সহ বাংলাদেশের অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর যে লাগাতার হিংসা চলছে, অবিলম্বে সেই ঘটনার নিন্দা করার জন্য রাষ্ট্রসংঘকে আর্জি জানাচ্ছি আমরা। বাংলাদেশে প্রতিনিধিদল পাঠানোর আর্জি জানাচ্ছি।’ সেইসঙ্গে শুক্রবার রাতের দিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাসভবনেও ফোন করা হয়। ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি রাধারমণ দাস বলেন, ‘শুক্রবার রাত আটটায় প্রধানমন্ত্রী বাসভবনেও ফোন করেছি। তাঁর হস্তক্ষেপের আর্জি জানানো হয়েছে। যে আধিকারিক ফোন ধরেছিলেন, তিনি জানিয়েছেন যে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে দেওয়া হবে।’
ইসকন কর্তৃপক্ষের দাবি, দশমীতে দুপুর দুটো নাগাদ বাংলাদেশের নোয়াখালিতে ইসকন মন্দিরের কাছে দুর্গাপুজোর মণ্ডপে ভাঙচুর চালানো হয়। তারপর হামলা চালানো হয় ইসকনের ভক্তদের উপর। ইসকনের প্রতিষ্ঠাতার বইয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙুচর চালানো হয় মন্দিরে। ইসকন কলকাতার সহ-সভাপতি বলেন, ‘জোতনকুমার সাহা এবং পার্থ দাস নামে আমাদের দুই ভক্ত-সহ কমপক্ষে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।’
উল্লেখ্য, দুর্গাপুজোর মধ্যে বাংলাদেশের একাধিক মণ্ডপে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটি পুজো মণ্ডপে কোরান শরিফের অসম্মান করা হয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। এরপর মণ্ডপে ভাঙচুর শুরু হয়। চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ, চট্টগ্রামের বাঁশখালি, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ এবং কক্সবাজারের পেকুয়ায় বিভিন্ন মন্দিরে হামলা চালানো হয়। বেশ কিছু ছবিও প্রকাশ্যে আসে যাতে দেখা যায় দুর্গা প্রতিমা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই সব প্রতিমা ভাঙার ছবি ছড়িয়ে পড়ে। সেই ঘটনায় জামাত-ই-ইসলামির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে। সরকারের দাবি, হাসিনা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এই হামলা চালিয়েছে জামাত।