আজ বিজয়া দশমী। দেবী দুর্গার বিদায়ের পালা। সকলের চোখে-মুখে এখন বিষাদের ছাপ। কৈলাসে ফিরবেন দুর্গা। তার আগে অশ্রুসজল চোখে কন্যাসম দুর্গাকে বরণ করে, মিষ্টি মুখ করিয়ে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন বাংলার বধূরা। তবে বর্তমানে অবিবাহিত ও বিধবারাও সিঁদুর খেলে থাকেন।
তবে বিজয়া দশমী ও সিঁদুর খেলা নিয়ে অনেকের মনে নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। দশমীর দিনে কেন সিঁদুর খেলা হয়, আবার দশমীর আগে কেনই বা বিজয়া শব্দটি ব্যবহার করা হয়? ইত্যাদি নানান প্রশ্ন থাকে সকলের মনে। ট্রেন্ডিং স্টোরিজ
সিঁদুর খেলার তাৎপর্য
বিজয়া দশমীর একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল সিঁদুর খেলা। হিন্দু বিবাহ রীতিতে সিঁদুরদান একট লৌকিক আচার। স্বামীর মঙ্গলকামনায় সিঁদূর পরেন বিবাহিত মহিলারা। দুর্গা বিবাহিত হওয়ায় তাঁকে সিঁদুর লাগিয়ে, মিষ্টি মুখ করিয়ে বিদায় জানানো হয়।
ভবিষ্য পুরাণ অনুযায়ী সিঁদুর ব্রহ্মের প্রতীক। বিবাহিত মহিলারা সিঁথিতে সিঁদুর পরে পরম ব্রহ্মের সামনে স্বামী ও নিজের মঙ্গল এবং দীর্ঘায়ু কামনা করেন। ব্রহ্ম সমস্ত দুঃখ কষ্ট দূর করে সুখ দান করেন। তাই দশমীর দিন সিঁদূর দান ও সিঁদূর খেলাকে সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করা হয়।
এ ছাড়াও শ্রীমদ্ভগবতে কাত্যায়নী ব্রত উপলক্ষে গোপীনিদের সিঁদুর খেলার বিবরণ পাওয়া যায়। তবে এটি কৃষ্ণের মঙ্গল কামনার জন্য করা হত।
বিজয়া শব্দ ব্যবহারের কারণ
দশমী বা বিজয়া দশমীর দিনে দুর্গা পুজোর সমাপ্তি ঘটে। দেবী দুর্গা এদিন কৈলাসে পতিগৃহে প্রস্থান করেন। পুরাণ অনুযায়ী আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের দশমী তিথিতে বাপের বাড়ি ছেড়ে কৈলাসে গমন করেন দুর্গা। কিন্তু এই দশমী কী করে বিজয়া দশমী হল, তার উল্লেখ পাওয়া যাবে নানান পুরাণে।
পুরাণে উল্লিখিত মহিষাসুর বধের কাহিনি অনুযায়ী, ৯ দিন ৯ রাত্রি মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধ হয় দশভূজা দুর্গার। দশমীর দিনে মহিষাসুর বধ করেন দুর্গা। অধর্মের ওপর ধর্ম ও অসত্যের ওপর সত্যের জয়ের দিন এটি। সেই জয়কে চিহ্নিত করতেই দশমীর আগে বিজয়া শব্দটি ব্যবহৃত হয়। দশমীর দিনে এই জয়লাভ বলে দিনটিকে বিজয়া দশমী বলা হয়।