অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরির কর্পোরেটাইজেশনের প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “দেশের অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিগুলি ও অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের কর্পোরেটাইজেশনের লক্ষ্যে সরকার এগোচ্ছে বলে রিপোর্ট পেয়েছি। বোঝা যাচ্ছে যে এর স্পষ্ট উদ্দেশ্য হল জাতীয় সম্পদের বেসরকারিকরণ করে দেওয়া। কিন্তু জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থের কথা মাথায় রেখে এই উদ্যোগ এখনই বন্ধ করা উচিত।” তাঁর কথায়, “শিল্পনীতি সরল করে বেসরকারি বিনিয়োগের জন্য সুবিধা করে দেওয়া যেমন দরকার, তেমনই কতকগুলি কৌশলগত বিষয়ে জাতীয় স্বার্থে সরকারকেই অভিভাবকের ভূমিকা পালন করতে হবে। সে কথা মাথায় রেখে যেন সিদ্ধান্ত বিবেচনা করে দেখেন প্রধানমন্ত্রী।”
এ দিনই আবার বেঙ্গল কেমিক্যালের বিলগ্নিকরণ প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, ১৯০১ সালে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় এই প্রতিষ্ঠানের পত্তন করেছিলেন। দেখতে গেলে এটিই দেশের প্রথম ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি। তাঁর কথায়, এটা ঠিক যে এখন সময় বেঙ্গল কেমিক্যাল রুগ্ণ হয়ে পড়েছিল।
কিন্তু ২০১৬-১৭ আর্থিক বছর থেকে তা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। গত আর্থিক বছরে ১০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে। সেই সঙ্গে তারা এ-ও দাবি করেছিল যে শিগগির তাদের মতো ১৩ টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার মধ্যে তারাই এ বার সব থেকে বেশি মুনাফা করতে চলেছে। এমনকি মিনি রত্ন কোম্পানি হয়ে ওঠার আশাও করতে তারা। ভারতীয় রসায়নের জনক আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের ঐতিহ্যের কথা মাথায় রেখেই এই সংস্থার বিলগ্নীকরণের উদ্যোগ বন্ধ হওয়া উচিত বলে চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন প্রদীপবাবু।
প্রসঙ্গত, এ বার বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন ঘোষণা করেন যে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ থেকে ১ লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। এমনকী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ৫০ শতাংশেরও বেশি শেয়ার বিলগ্নীকরণের ব্যাপারেও বিবেচনা করছে কেন্দ্র। সংশয় নেই, সেরকম হলে সংস্থাগুলির রাষ্ট্রায়ত্ত চরিত্রই আর থাকবে না। তাতেই আপত্তি জানাতে শুরু করেছেন বিরোধীরা।