পুজো মিটলেই বঙ্গে ফের আরও উপনির্বাচন। দিনহাটা উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডলের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল দিনহাটার সদর দফতরে। অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা প্রার্থী, বিধায়ক-সহ বিজেপি কর্মীদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন খোদ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক।
জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা, বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে শুক্রবার মনোনয়ন জমা দিতে যান বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডল। কিন্তু মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগেই বিপত্তি। আচমকা, তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা অভিযোগ এমনটাই। বিক্ষোভের মধ্যেই ওঠে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান।
বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে-র কথায়, “ইচ্ছে করে এই বিক্ষোভ করা হল। এরা সবাই উদয়ন গুহর অনুগামী। তৃণমূল নেতা তাঁর প্রভাব খাটিয়ে ইচ্ছে করে এই ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি করলেন। নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ, আপনারা এই বিশৃ্ঙ্খলা ও তৃণমূলী সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করুন।”
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক বলেন, “কে কী বলল, কে কী স্লোগান তুলল তাতে কিছু যায় আসে না। শেষ কথা সাধারণ মানুষ বলবেন। অশান্তির বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রত্যেক ভারতীয় জনতা কর্মীর বাড়িতে গিয়ে তাদের উপর নির্বিচারে আঘাত হানা হচ্ছে। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই।”
যদিও, হামলা ও বিক্ষোভের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। শাসক শিবিরের দাবি, তৃণমূল নয়, সাধারণ মানুষই বিজেপি বিরোধিতা করেছে। এই ঘটনায় শাসক শিবিরের কোনও হাত নেই। যদিও, তৃণমূল নেতা তথা বিধায়ক উদয়ন গুহর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, দিনহাটায় এই প্রথম নয়, বিভিন্ন সময়েই তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ অথবা তৃণমূল বিজেপি সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে এলাকা। সম্প্রতি, দিনহাটায় রাজনীতি করলে উদয়ন গুহকে বাদ দিয়ে বা অমান্য করে রাজনীতি করা যাবে না এমন হুমকিই পরোক্ষে জারি করেছিল তৃণমূল। উদয়ন গুহকে ঘিরে বিতর্কও কোনও নতুন ঘটনা নয়। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে তাঁর বিবাদের কথা রাজনৈতিক মহলে অবগত। একাধিকবার, সেই বিরোধ রাজ্য নেতৃত্ব চেয়েও থামাতে পারেনি। সম্প্রতি, দলের একাংশের বিরুদ্ধেই বিক্ষুব্ধ উদয়ন স্পষ্টই জানিয়েছিলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত হলেই দল থেকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন উদয়ন। প্রাক্তন বিধায়কের সেই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে চরমে ওঠে সংঘর্ষের পারদ। ফের প্রার্থীর মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনায় সামনে এল তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ।