বিজ্ঞাপনটা একটু পড়বেন মমতা

বিজ্ঞাপনটা একটু পড়বেন মমতা ।

এখন আপনি এম এল এ CM ।

“নন এম এল এ CM” নন । তাই পড়া উচিত, মন দিয়ে, সময় করে । ধৈর্য ধরে ।

বিজ্ঞাপনটা বেরিয়েছে ৩ রা অক্টোবর আনন্দবাজারের সাতের পাতায় । বিজ্ঞাপনটা দিয়েছেন ডি ভি সি কর্তৃপক্ষ । ছোট করে, যেটা বড় হরফে বড় আকারে দেওয়া উচিত ছিল ডি ভি সির ।

কি লেখা হয়েছে বিজ্ঞাপনে ? একটু উল্লেখ করি শেষের অংশটা ।

” জল ছাড়বার আগে বন্যা সম্পর্কিত সতর্কতা মূলক বার্তা অনেক আগে থেকেই চিফ ইঞ্জিনিয়ার, পশ্চিম বঙ্গ সরকার, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার জেলা শাসকদের এবং সুপারিনটেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার এবং একসেকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, দুর্গাপুর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এঁদের কাছে পাঠানো হয় । এক্সেকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, দুর্গাপুর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার পুনরায় এই বার্তা হুগলী, হাওড়ার জেলা শাসকদের, এস ডি ও, এ ডি এম, বিডিও এবং অন্যান্যদের ফ্লাড ওয়ার্নিং মেমোরেন্ডাম অনুযায়ী পাঠিয়ে দেন । বন্যা সম্পর্কিত বিষয়ে এই প্রচলিত পদ্ধতিটি অনুসরণ করা হয় ।”.………………INF/65/Misc.121-22

ঠিক একই বয়ান ২ তারিখ নবান্নের সেচ দফতরের একসেকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জয় সিংহ প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছিলেন ” দুর্গাপুর ব্যারেজের জল ছাড়ার আগাম বার্তা আসে ডি ভি সি থেকে । এবারও তার অন্যথা হয়নি । তা না হলে ব্যারেজের বিপর্যয় ঘটে যাবে । “

কে বলছেন এ কথা ? খোদ মমতার সরকারের সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ার । কে সামলান এই দফতর ? মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র । তিনি কার রিক্রুট ? মমতার ।

ঠিক একই সময় মমতা নিজে কি বললেন এবার তার নির্যাসটুকু বলি –

” পশ্চিমবঙ্গকে না জানিয়ে জল ছেড়ে ডি ভি সি ক্রাইম বা অপরাধ করেছে । এটা ম্যান মেড ফ্লাড ।”

ডি ভি সি কতৃপক্ষের বিজ্ঞাপনের বয়ান যেটা উল্লেখ করলাম সেই বিজ্ঞাপনের প্রতিলিপিটা এবার নীচে তুলে দিলাম । আর মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সেচ দফতরের একসেকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ারের বক্তব্য ? আনন্দবাজারের প্রথম পাতায় ২রা অক্টোবর যেটা বেরিয়েছে, বড় বড় হরফে, সেটারই উল্লেখ করলাম ।

এরপরও কি আলাদা করে উপসংহার টানতে হবে যে খোদ মুখ্যমন্ত্রী বন্যা নিয়ে মিথ্যে কথা বলছেন । নিজের সরকারের সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ার যখন প্রেসের সামনে মুখ্যমন্ত্রীকেই মিথ্যাবাদী প্রমাণিত করেন তখন সরকার কেমন চলছে সেটা পরিষ্কার হয়ে যায় । কিন্তু দুঃখ লাগে একটি জিনিস ভেবে একজন মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্য দিবালোকে সংবাদ মাধ্যমকে নির্লজ্জ ভাবে মিথ্যে বলে চলেছেন । একজন সাংবাদিকও মুখ্যমন্ত্রীকে এ নিয়ে কাউন্টার প্রশ্ন করল না কেন ? কোন বাংলা সংবাদ মাধ্যম এ নিয়ে একটা এডিট কিম্বা পোস্ট এডিট লিখতে পারলো না কেন ??

এত কেনর কোনো উত্তর নেই । কে দেবে উত্তর ?

গৌর কিশোর ঘোষ, সন্তোষ ঘোষ, অভীক সরকারের হাতে আনন্দবাজার থাকলে সম্পাদকীয় স্তম্ভে এতক্ষণে হয়তো লেখা হয়ে যেত – মুখ্যমন্ত্রী, আপনার মুখে এত মিথ্যে শোভা পায় না ।

আজ আর তারা সেটা লিখবে না, কারণ আনন্দবাজার এখন চাকর বাকরদের হাতে । “মামা মাইমা”রা কাগজ চালান । নবান্নের থেকে মাসের শেষে এটা ওটা বাবদ যে বকশিস জোটে অফিসের মাইনেটাই শেষ পর্যন্ত তাদের কাছে “উপরি” হয়ে যায় ।

কিছু বেকুব বাঙালি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সেই আনন্দবাজারের অপেক্ষায় এখনও বসে থাকে কোন বিশ্বাসে ভর করে ঈশ্বরই একমাত্র হয়তো জানেন !!

সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় (৯৮৩০৪২৬০৭৮)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.