লখিমপুর খেরি হিংসার ঘটনায় প্রতিবাদ করতে গিয়ে আটক হলেন কংগ্রেস নেতা নভজ্যোত সিং সিধু। এ দিন তাঁকে রাজ্য়পালের বাসভবনের সামনে থেকে আটক করে চণ্ডীগঢ় পুলিশ।
রবিবার উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ও উপমুখ্যমন্ত্রীর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। সেই অনুষ্ঠান ঘিরে কৃষকরা আন্দোলন দেখায় এবং সেখান থেকে যে হিংসা ছড়ায়। ওই সংঘর্ষে ৪ কৃষকের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। অন্যদিকে বিজেপির তরফেও দাবি, তাদের ৩ কর্মী ও এক গাড়ি চালকের মৃত্যু হয়েছে। এরপরই শুরু হয় রাজনৈতিক চাপানউতোর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে যে হিংসার ঘটনা ঘটে এবং ৪ কৃষকের মৃত্যু হয়, তার প্রতিবাদেই এদিন দুপুরে পঞ্জাবের রাজ্য়পাল বানওয়ারিলাল পুরোহিত-এর বাসভবনের বাইরে কংগ্রেসের সদস্য়দের নিয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তিনি। সিধুর সঙ্গে পঞ্জাব কংগ্রেসের একাধিক বিধায়ক ও পিওয়াইসির সভাপতি বারিন্দর ধিলোনও ছিলেন।
পুলিশ বলপূর্বক প্রথমে বিক্ষোভকারীদের সরানোর চেষ্টা করে এবং পরে সিধু সহ বাকি বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতার করে। জানা গিয়েছে, নভজ্যোত সিং সিধু গতকালের ঘটনায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্রের ছেলের গ্রেফতারির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছিলেন। একইসঙ্গে, বিতর্কিত মন্তব্য করার জন্য় হরিয়ানার মুখ্য়মন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর-এর বিরুদ্ধেও দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চন্নিও লখিমপুর খেরিতে যেতে চেয়েছিলেন। সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে উত্তর প্রদেশ সরকার। এ দিন সকালেই পঞ্জাব সরকারের তরফে উত্তর প্রদেশ সরকারের কাছে আবেদন জানিয়ে বলা হয়, মুখ্য়মন্ত্রী চন্নির হেলিকপ্টার যেন লখিমপুর খেরিতে নামার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে যোগী সরকারের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া অবধি কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বই লখিমপুরে যেতে পারবেন না। এ দিন সকালেই পঞ্জাবের উপ মুখ্যমন্ত্রী সুখজিন্দর সিং রণধাওয়ার বিমানও লখনউ বিমানবন্দরে অবতরণের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, সকালেই উত্তর প্রদেশ সরকারের তরফে পঞ্জাব সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল লখিমপুর খেরির হিংসার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাউকে যেন পঞ্জাব থেকে উত্তর প্রদেশে আসতে না দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টরের মন্তব্যেও বিতর্ক শুরু হয়েছে। গতকালই তিনি একটি কৃষক সভায় বলেন, ” প্রত্যেক অঞ্চল থেকে ৫০০-৭০০ বা এক হাজার জন করে স্বেচ্ছাসেবক এগিয়ে আসুক এবং তারা হাতে লাঠি তুলে নিয়ে কৃষকদের উচিত জবাব দিক। গ্রেফতারি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। ২-৪ মাস জেল খেটে এলে আরও বড় নেতা হয়ে যাবে।”
মনোহর লাল খট্টরের এই মন্তব্যেরই সমালোচনা করেছেন একাধিক কংগ্রেস নেতৃত্ব। এদিন নভজ্যোত সিং সিধুও তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করার দাবি জানান।