“”এরকম থাকার থেকে না থাকা ভালো। অনেক কষ্টের জীবন। মেয়েটা অসুস্থ, পড়ে রইছে ঘরে, মেয়ে নিয়ে থাকি। স্বামীর এই অবস্থা।”
——- কারাবন্দী গৌরাঙ্গের স্ত্রী রীনা রানী দে।।
স্বামী গৌরাঙ্গ চন্দ্র দে ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগে কারাগারে বন্দী, গৌরাঙ্গের স্ত্রী রীনা রানী দে সহ পুরো পরিবার গৃহবন্দী, প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বের হতে নিষেধ করা হয়েছে, কতদিন এভাবে থাকতে হবে সেটিও অনিশ্চিত। গত দুই সপ্তাহ ধরে তারা কেউ বাড়ির বাইরে বের হন না। ঘটনার পর থেকে বাজারে গৌরাঙ্গের দুটি দোকানও বন্ধ রয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ ভুয়া ফেসবুক একাউন্ট খুলে গৌরাঙ্গকে ফাঁসানো হয়েছে, সেই ফেসবুক একাউন্টও গৌরাঙ্গকে গ্রেপ্তারের পর অচল অর্থাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভুয়া ফেসবুক একাউন্টের বিষয়টি নজরে আসার পরপরই গৌরাঙ্গ চন্দ্র দে গত ১৫ ই সেপ্টেম্বর স্থানীয় থানায় জিডি করেন কিন্তু পরদিনই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়! গৌরাঙ্গের একটি দোকানে বসতেন তার ছোট ভাই রাজকুমার দে। তিনি জানিয়েছেন, “খুব আতঙ্কে আছি। আমরা কেউই বাইরে যাওয়ার মতো চিন্তাও করতে পারি না। বাইরে যাবো, ঘোরাফেরা করবো। বাজারে যাব, দোকান খুলবো এই সাহস পাচ্ছি না আমরা”। প্রায় নিয়মিত গৌরাঙ্গের শাস্তির দাবিতে মিছিল বিক্ষোভ চলছে! বিষয়টি নিয়ে ভোলায় একদিকে যেমন উত্তেজনা বিরাজ করছে, অন্যদিকে স্থানীয় হিন্দুদের মধ্যে রয়েছে আতঙ্ক আর ক্ষোভ। গল্প আর চিত্রনাট্য মোটামুটি একইরকম কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এরকম একটা অস্বস্তিকর পরিবেশে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু তথা হিন্দু সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব রক্ষা, এদেশে আমাদের টিকে থাকা আসলেই কি সম্ভব??? বাঁচা যায় নাকি এভাবে??? উল্লেখ্য, ভোলায় গত দুই বছরের মধ্যে এটি তৃতীয় ঘটনা।
নিলয় চক্রবর্তী।
১লা অক্টোবর ২০২১ ইং।।