বর্তমান পত্রিকায় ডঃ অমিত মিত্রর সাক্ষাৎকার সম্পর্কে একটা ছোট উত্তর আমরা পাঠিয়েছিলাম পার্টির তরফ থেকে l হয়তো ছাপা হবে না l তাই এই প্রসঙ্গে আমাদের বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়াতেই দিতে হচ্ছে l প্রথমে আসি শিরোনামে l “বাংলার অর্থনৈতিক শক্তিতে দেশে চতুর্থ ” l ভাল কথা l কিন্তু তৃতীয় কে বলুন ডঃ মিত্র? তৃতীয় যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশ l কেন বর্তমানের প্রতিবেদকের এই সত্যটা লিখতে এতো অনীহা? উনি বৃদ্ধির হার তুলনা করছে 2011 র পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে l 2011 তে পশ্চিমবঙ্গ ছিল একটা বামফ্রন্টের ফেলে রাখা ধংসস্তুপ l তার সঙ্গে তুলনা করলে সংখ্যাটা তো বড় দেখাবেই l 2011 র মহারাষ্ট্র ছিল এক উন্নত রাজ্য l সেখানে কি এই হার দেখানো যাবে? তার আগের তিন দশকও উন্নয়ন হয়েছে ওখানে l ডঃ মিত্র বলছেন দেশের বৃদ্ধির হাত -7% এবং পশ্চিমবঙ্গের 1% l অর্থাৎ উনি 8% এগিয়ে l এখন দেশ কেন 7% পিছলো? সারা দেশে শিল্প, পর্যটন, পরিবহন, ব্যাবসা ইত্যাদি বন্ধ হয়ে গেছে গত বছর কোভিড অতিমারীর জন্য l. তাই উৎপাদন বা বৃদ্ধির হার 7% কমেছে l পশ্চিমবঙ্গে তো শিল্প ও বাণিজ্য নেইই l যা বন্ধ হবার আগেই হয়ে গেছে l সেটা করোনার জন্য না, আমাদের নেতিবাচক রাজনীতির জন্য l সেটা আর কমার জায়গা কোথায়? এবার দেশ যখন 20% হারে বাড়লো, তখন পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যাটা কি বলুন? আমাদের বৃদ্ধির হার কত এবার? উনি বলেছেন পরিকল্পনার 85% মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন l সেটা সাফল্য না প্রশাসনিক ব্যর্থতা? আপনি রাস্তা বানালেন না, বিদ্যুৎ প্রকল্প বানালেন না, নতুন হাসপাতাল বানালেন না, নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বানালেন না, নতুন জলের সংযোগ দিলেন না, নতুন পয়প্রণালী বানালেন না, কোন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে সহায়ক বরাদ্দ না দিয়ে ফ্রেট কোরিডোর, ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডোর, বন্দর, বিমানবন্দর তৈরি হাতে দিলেন না, SEZ না দিয়ে রফতানি শিল্পের বারো বাজালেন এবং সব টাকা খেলা মেলা ও মোচ্ছবে খরচ করে, রাজ্যের ধারের পারিমান সাড়ে পাঁচ লক্ষ কোটিতে নিয়ে গিয়ে রাজ্যের বেকার সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুললেন এবং সেটাকে করে সাফল্য বলে চালাচ্ছেন? কোন পিতা যদি পরিকল্পনা করে তাঁর ছেলের জন্য বরাদ্দ টাকা পড়াশুনা, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা ইত্যাদি খাতে না রেখে, পুরোটাই ছেলের হাতে তুলে দেন, সেই ছেলের ভবিষ্যৎ কি? ছেলের অসুখ হলে বাবা বলবে তোমার হাতে তো টাকা আগেই দিয়েছি, তাই তো? পরিকল্পনা খাতে খরচ না করার জন্যই তো আজ বন্যায় বাড়িতে জল ঢুকছি, বিদ্যুতের তারে শিশুমৃত্যু ঘটছে, রাস্তায় যানজট, চাষীরা জমি ফেলে রাখছে চাষ না করে, শিক্ষা/স্বাস্থ্যে চরম অব্যাবস্থা l যে মায়ের কোল আপনার এই পরিকল্পনা খাতের 85% ‘ মানুষের হাতে সরাসরি’ চলে যাবার জন্য খালি হচ্ছে(তড়িতাহত হয়ে ), তিনি আপনার লক্ষীর ভান্ডারের 500 টাকা নিয়ে কি করবেন? যে যোগীভাইকে আপনারা কথায় কথায় আক্রমণ করছেন, তিনি বারো লেন রাস্তা, গঙ্গা সেচ প্রকল্পের আধুনিকীকরণ, অপ্রচলিত বিদ্যুৎ এনে বিদ্যুতের দাম নিয়ন্ত্রণ, স্যামসুংকে চীন থেকে নিজের রাজ্যে নিয়ে আসার পরেও তো দেশের সব প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নিজের রাজ্যকে এগিয়ে রেখেছেন l কতজন যোগী রাজ্যের মানুষ ভেলোর যায় আর কত জন এই বুদ্ধিজীবী বাংলা থেকে? বর্তমান পত্রিকাকে অনুরোধ একবার সেই তথ্য জানান মানুষকে l
সুদীপ্ত গুহ