একুশের মঞ্চ থেকে সিপিএমের বিরুদ্ধে কড়া কড়া তোপ দেগেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিকাশভবনের সামনে প্রাথমিক শিক্ষকদের অনশন মঞ্চে দাঁড়িয়ে আরও কড়ায় ভাষায় পাল্টা দিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী। কাটমানি, ব্যালট—এক্কেবারে ইস্যু ধরে ধরে।
এ দিন একুশের মঞ্চের ব্যাকড্রপের স্লোগানই ছিল, ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে দাও, মেশিন নয় ব্যালট ফেরাও।’ আর সেই ইস্যুতেই সুজন বললেন, “ইভিএমের ভোটেই তো ২০১১ আর ২০১৬ তে জিতেছেন। উনি কি তাহলে ইভিএমের ভোট ফেরত দেবেন?” সুজন আরও বলেন, “একটা সময়ে উনিই ব্যালটের বদলে ইভিএম চাইতেন। এখন উনিই বিরোধিতা করছেন। একটা সময়ে উনিই সব কিছুতে সিবিআই তদন্ত চাইতেন। এখন উনিই সিবিআই-এর ভয়ে ঠকঠক করে কাঁপছেন।”
লোকসভা ভোটে বাংলা সিপিএম শূন্য। ভোট শতাংশ নিয়েও আলিমুদ্দিনের চুল ছেঁড়ার অবস্থা। কিন্তু সিপিএম-কে আক্রমণ করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহজাত। যুগ যুগের অভ্যাস। তাই এই একুশের মঞ্চ থেকেও সিপিএম-কে বিঁধতে ছাড়েননি দিদি। কখনও বলেছেন, চৌত্রিশ বছরে সিপিএম কত কাটমানি নিয়েছে? কখনও সিপিএম কংগ্রেসকে এক ব্র্যাকেটে ফেলে বলেছেন, “যে ডালে বসে আছো সেই ডাল কেটো না। তোমার সাইনবোর্ড বিজেপি নিয়ে নিয়েছে। কী করে হয়?” অনেকে আবার বলছেন, সিপিএম-কে চাগাতেই তিনি এ সব কটাক্ষ করছেন।
কাটমানি প্রসঙ্গে যাদবপুরের সিপিএম বিধায়ক বলেন, বিরোধী থাকার সময়েও তো এ কথা বলেননি। এখন বলছেন।” একই সঙ্গে তিনি বলেন, “আপনার আরও তিনটে জন্ম লেগে যাবে বামপন্থীদের কাটমানি প্রমাণ করতে। যদি হিম্মত থাকে তাহলে কমিশন করে তদন্ত করুন।”
এমনিতে একুশে জুলাই নিয়েও সিপিএমের কটাক্ষের শেষ নেই। সেই সময়ের স্বরাষ্ট্র সচিব মনীশ গুপ্তকে তৃণমূলের নেতা করায় প্রায়ই সিপিএমের নেতারা বলেন, “যে মনীশ গুপ্ত ছিলেন হার্মাদ, তিনিই হয়ে গেলেন শান্তি সেনা।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারে আসার পরই একুশে জুলাই নিয়ে কমিশন গড়েছিলেন। সেই কমিশনে হাজিরা দিতে যেতে হয়েছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকেও। এ নিয়েও সিপিএম নেতারা বলেন, “মমতার যদি সাহস থাকে তাহলে কমিশনের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করুক। পারলে বাম নেতাদের জেলে ঢোকাক।” সুজনও কার্যত সেই সুরেই আক্রমণ শানিয়েছেন দিদির বিরুদ্ধে।