এমনিতেই রাজনৈতিক হাওয়া বদলের চাপে সভা ভরানো নিয়ে আশঙ্কায় ছিলেন দলের নেতা-কর্মীরা। তার মধ্যে তীব্র দাবদাহে দলের কর্মী-সমর্থকরা সভাস্থল ছাড়া শুরু করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসার আগেই। তাই নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট আগেই বক্তব্য শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মীদের ধরে রাখার জন্য তাঁকে বলতে হল, বিজেপিকে রোখার জন্য সূর্য আপনাদের তেজ দিচ্ছে। আপনারা এটা নিন।
মমতার বক্তব্য শুরুর আগেই এদিন ধর্মতলা চত্বর ফাঁকা হতে শুরু করে। লোকজন সভাস্থল ছাড়তে শুরু করলে প্রথমে তৃণমূলের ভলান্টিয়াররা তাঁদের বাধা দেন। একটু জোর করে বসানোর চেষ্টা করেন। তাতে খানিকটা তর্কাতর্কিও হয়। কিন্তু অনেককেই আটকানো যায়নি। তাঁরা জোরজবরদস্তি বেরিয়ে যান। তাঁদের সকলেরই বক্তব্য, এত গরমে আর বসা যাচ্ছে না। শরীর খুব খারাপ লাগছে। এখানে জলের ব্যবস্থা নেই। গাড়িগুলি ফিরে যেতে থাকে উল্টো মুখে।
পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে আসা এক যুবক বেরিয়ে যেতে যেতে বলেন, ”সকাল আটটা থেকে এখানে এসে বসে আছি। এই গরমে খুব কষ্ট হচ্ছে। আর বেশিক্ষণ বসে থাকলে সানস্ট্রোক হয়ে যাবে।”
নন্দীগ্রাম থেকে এসেছিলেন আসিফ রহমান। বউ, বাচ্চাকে নিয়ে দিদির বক্তব্য শুনতে এসেছিলেন। কিন্তু দলে দলে লোকজন যখন বেরনো শুরু করেছে তখন তিনিও ব্যারিকেডের এপারে চলে এলেন। আসিফ বলেন, ”আর পারছি না। সঙ্গে ছোটো বাচ্চা আছে।” অন্যান্যবার একুশে জুলাই বৃষ্টি হয় কিন্তু এবার বৃষ্টির দেখা নেই।এদিন অনেকেই গরমে অসুস্থ হয়ে গিয়েছেন।
তৃণমূলের ভোলেনটিয়াররাও বলছেন, জলের গাড়িগুলো সাইডে থাকায় খাবার জল পেতে খুব অসুবিধে হচ্ছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য চলাকালীন সভাস্থল ফাঁকা হতে শুরু করে। ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনের ছবিতে দেখা যাচ্ছে, লোক প্রায় নেই। ৩৫ ডিগ্রি গরম হার মানাল দিদির বক্তব্যকে।
বরাবরই একুশে ভিড় জমিয়েছে তৃণমূল। ক্ষমতায় আসার পর সভা ভরাতে কোনও অসুবিধাই হয়নি। জননেত্রীর বক্তব্য শুনতে জেলা থেকে লোক এসেছেন। কিন্তু এবার শুরু থেকেই হাওয়াটা ছিল অন্যরকম। যেখানে এসে কর্মীরা থাকেন, সেখানেও তেমন ভিড় ছিল না। আর সভার দিনেও সেই ছবি অব্যাহত। সূর্যের তেজের কাছে কী হার মানল অগ্নিকন্যার বক্তৃতা? নাকি নিছকই রাজনৈতিক অঙ্ক, সেটা হয়ত সময় বলবে।