‘খাবার জুটছে না, মেয়েটাকে বিক্রি করে দিতে চাই’, চোখে জল আফগানিস্তানের প্রাক্তন পুলিশ কর্তা বাবার

তালিবানরা ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দুর্বিষহ দিন কাটছে আফগানবাসীর। খাবারের দাম আকাশছোঁয়া। বেকারত্ব চরম সীমায় পৌঁছেছে। দারিদ্র আর অনাহারে দিন কাটছে সাধারণ মানুষের। এই অবস্থা থেকে বাঁচতে নিজের মেয়েকে বিক্রি করে দিতে চাইছেন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা মীর নাজির।

গজনিতে গনি সরকারের পুলিশ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু তালিবানরা ক্ষমতা দখলের পরই সেই কাজ গেছে। এখন কাবুলের বাজারে মুটেগিরি করেন নাজির। কিন্তু তাতে স্ত্রী ও ৫ সন্তানের মুখে প্রতিদিন অন্ন তুলে দিতে পারেন না। অগত্যা নিজের মেয়েকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।

নাজিরের কথায়, ‘মেয়েকে বিক্রি করার আগে আমার মরণ হোক। কিন্তু আমার মৃত্যুতে পরিবারের কোনও সুরাহা হবে না। কে আমার সন্তানদের মুখে অন্ন জোগাবে’? এখানেই থামেননি নাজির। গোটা বিশ্বের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, ‘ভাববেন না আমি আপনাদের থেকে আলাদা। আমিও আপনাদের মতোই নিজের সন্তানকে প্রচন্ড ভালোবাসি। মেয়েকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে আমার হৃদয় কেঁপে গিয়েছে। কিন্তু এছাড়া আমি আর কিই বা করতে পারি’ !

তালিবানরা দখলের আগে থেকেই আফগানিস্তানের অর্থনীতি কোমায় চলে গিয়েছিল। আর এখন তো আইএমএফ ৬৪০ মিলিয়ন ডলারের এমার্জেন্সি রিজার্ভেও ব্যান লাগিয়ে দিয়েছে। আমেরিকা ৭ বিলিয়ন ডলার আটকে দিয়েছে। হাত তুলে দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্কও। অথচ আফগানিস্তানের অর্থনীতির ৭৫ শতাংশই চলে বিদেশি অর্থসাহায্যে। পাকিস্তানের কথা বাদ দেওয়া যাক, চিনের থেকে খুব বেশি অর্থসাহায্য মিলবে না বলেই মনে করছে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর আজমল আহমদি। এই পরিস্থিতিতে অনাহার আর দারিদ্রই সঙ্গী হতে চলেছে আফগানবাসীর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.