পাঁচ থেকে এগারো বছর বয়সি শিশুদেরও এ বার কোভিড টিকা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আমেরিকার ওষুধ সংস্থা ‘ফাইজার’। প্রাপ্তবয়স্কদের টিকার মতো এই টিকাও ফাইজার বানিয়েছে ‘বায়োএনটেক’-এর সহযোগিতায়।
বায়োএনটেক-এর সহ প্রতিষ্ঠাতা চিকিৎসক ভোজলেম তাওরেসি জার্মানির সংবাদমাধ্যম ‘দার স্পিগেল’-কে এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “৫ বছর থেকে ১১ বছর বয়সি শিশুদের যাতে অবিলম্বে এই কোভিড টিকা দেওয়া সম্ভব হয়, সে জন্য আমরা বিশ্বজুড়ে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালিয়েছিলাম। শিশুদের ক্ষেত্রে টিকার কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা নিয়ে আমরা নিশ্চিত। সেই ট্রায়ালের ফলাফল এ বার আমরা জমা দেব আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)-র কাছে। দ্রুত অনুমোদনের জন্য।’’
ডেল্টা হানায় আমেরিকায় শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের ঘটনা রীতিমতো উদ্বেগজনক। ডেল্টায় সংক্রমিত হয়ে আমেরিকার বিভিন্ন প্রদেশে শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর ঘটনা উত্তরোত্তর বাড়ছে। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব পিডিয়াট্রিক্স জানিয়েছে, অতিমারি শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৫০ লক্ষেরও বেশি শিশু কোভিডে আক্রান্ত হয়েছে। গত ২৬ অগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বরের সপ্তাহে আমেরিকায় নতুন করে আরও আড়াই লক্ষ শিশু (আমেরিকায় ডেল্টায় মোট আক্রান্তের ২৬.৮ শতাংশ) আক্রান্ত হয়েছে। এই শিশুদের বয়স ৫ থেকে ১১ বছরের মধ্যে। শুধু ৭ সেপ্টেম্বরেই ২ হাজার ৩৯৬টি শিশু কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে আমেরিকার বিভিন্ন হাসপাতালে।
ভারত-সহ বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকেই খবর আসছে, ডেল্টা হানায় বেশি আক্রান্ত হতে শুরু করেছে শিশুরা। যা ভাইরাসের আগের রূপগুলির ক্ষেত্রে চোখে পড়েনি।
এই পরিস্থিতিতে বায়োএনটেক কর্তার শুক্রবারের ঘোষণা যথেষ্টই আশাব্যঞ্জক। তিনি জার্মানির সংবাদমাধ্যমটিকে এও বলেছেন, “শিশুদের জন্য ওই টিকার উৎপাদন করতে ইতিমধ্যেই প্রস্তুত।”
তাওরেসি জানিয়েছেন, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যে কোভিড টিকা বানানো হয়েছিল, শিশুদের সেটাই দেওয়া হবে। তবে তার মাত্রা হবে অনেক কম।
এখন ফাইজারের টিকা দেওয়া হয় ১২ বছর বয়সী ও তার বেশি বয়সিদের। আমেরিকার অন্য দু’টি ওষুধ সংস্থা মডার্না এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দেওয়া হয় শুধুই ১৮ বছর বয়সী ও তার বেশি বয়সিদের।
এফডিএ-র কমিশনার চিকিৎসক জ্যানেট উডকক বলেছেন, “অন্য টিকাগুলির মতো আমরা এ ক্ষেত্রেও বিজ্ঞানকেই গুরুত্ব দেব অনুমোদনের জন্য। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত সেই অনুমোদন না দেওয়া হচ্ছে, তত দিন সব প্রাপ্তবয়স্ককে বলব শিশুদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। মাস্ক পরুন। আর নিজেরা টিকা নিয়ে নিন যত দ্রুত সম্ভব।”