আফগান ভূমিকে সন্ত্রাস- মাদকের আঁতুর ঘর হতে দেওয়া যাবে না, চিন রাশিয়ার সামনে ব্রিকস সম্মেলনে বললেন মোদী

আফগানিস্তান যেন প্রতিবেশীদের জন্য বিপদের কারণ না হয়ে ওঠে। পাঁচ দেশের ব্রিকস সম্মেলনে এই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর আরও আশঙ্কা, সন্ত্রাস ও মাদক পাচারের আঁতুড়ঘর উঠতে পারে আফগানিস্থান। অন্যদিকে, তালিবান বিরোধী আফগানিস্তানের নাগরিকদের বিক্ষোভকে সমর্থন করার ইঙ্গিত দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায় কয়েক দশক ধরে লড়াই করছেন আফগানরা। তাই কি ধরনের দেশ তারা দেখতে চাইছেন সে ব্যাপারে মত প্রকাশের পূর্ণ অধিকার রয়েছে তাদের।

ব্রিকসের ভার্চুয়াল বৈঠকে মোদী ছাড়াও অংশগ্রহণ করেন চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং, রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন, দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি শিরিল রামাফোসা, ব্রাজিলের জেয়ার বালসেনোরা। সেখানে আফগানিস্তান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। কারণ তালিবান সরকারকে মান্যতা দেওয়ার কথা জানিয়েছে চিন ও রাশিয়া। ইতিমধ্যেই বেজিংয়ে গিয়ে তালিবান নেতারা চিনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

আফগানিস্তানের পরিস্থিতিকে মাথায় রেখে এদিন ব্রিকস সন্ত্রাস দমন পরিকল্পনার প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ৫ দেশ। আগামী ১৫ বছর ব্রিকসকে আরও গতিশীল হতে হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী। রাশিয়া তালিবানের প্রতি নরম অবস্থান নিলেও তালিবানদের ক্ষমতা দখল বিশ্ব সুরক্ষার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে সেটাও আবার মেনে নিয়েছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের কথায়, মার্কিন ও সহযোগী দেশগুলি আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের পরেই নতুন সংকট তৈরি হয়েছে। এর ফলে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা কিভাবে প্রভাবিত হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। আন্তর্জাতিক সুরক্ষা গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে। স্থিতাবস্থায় ব্যাঘাত ঘটেছে। তিনি বলেন, আফগানিস্তান নিয়ে ব্রিকস ভুক্ত দেশগুলি বিশেষ নজর দিয়েছে।

আফগানিস্তানের পরিবর্তিত পরিস্থিতির উপর নজর রেখে চলেছে নয়াদিল্লি। সেদেশের তালিবান উত্থানের পেছনে রয়েছে পাকিস্তান। চিনের সাথে হাত মিলিয়েছে তালিবানরা। চিন যে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী তা স্পষ্ট করে দিয়েছে তালিবান মুখপাত্র। প্রথমদিকে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বের বার্তা বললেও ধীরে ধীরে মুখোশ খুলতে শুরু করেছে তালিবানরা। কাশ্মীর প্রশ্নে তারা বলেছে, উপত্যকার মুসলিমদের জন্য তারা সরব হবেন।

এরমধ্যে কাবুলে পৌঁছেছেন আইএসআই প্রধান হামিদ কারজাই। শোনা যাচ্ছে তালিবান সরকার গঠনের নেপথ্যে রয়েছেন তিনি। তালিবানকে কাজে লাগিয়ে নতুন করে কাশ্মীরকে অশান্ত করার কৌশল নিয়েছে ইসলামাবাদ এমনটাই আশঙ্কা নয়াদিল্লির। সেই আশঙ্কাই প্রতিফলিত হয়েছে মোদীর বক্তব্যে। তাই আফগানিস্তানের মাটি সন্ত্রাসবাদি কাজকর্মে ব্যবহৃত হতে পারে তা স্পষ্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.