বেশকিছু শতাব্দী ধরেই বিজ্ঞানীরা অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন। কিন্তু সেই প্রচেষ্টায় পড়ল সিলমোহর, বাস্তবে চাঁদের বুকে পাওয়া গেল জলের অস্তিত্ব। সেই সঙ্গে দেখা মিলেছে বরফের আস্তরণেরও। ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রাভিযান মিশনের Chandrayaan-2 এর দৌলতে এই তথ্য নিশ্চিতভাবে পাওয়া গিয়েছে। আমদাবাদের Space Applications Centre (SAC)-এর সৌজন্যে তৈরি Chandrayaan-2-ই শেষ পর্যন্ত প্রমাণ করল চাঁদের মাটিতেও রয়েছে জল।
Chandrayaan-2 এর পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, চাঁদের যে পৃষ্ঠে আলো কখনোই পৌঁছয় না, সেখানে বরফের আস্তরণের মধ্যে রয়েছে জলের অস্তিত্ব। ISRO-এর তরফে প্রমাণসহ এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
চাঁদের এই ছায়াবৃত অঞ্চলটিকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় বলা হয় Permanently shadowed regions বা পিএসআর (PSR)। কিন্তু পর্যাপ্ত আলোর অভাবে এই অঞ্চল সম্পর্কে কোনও তথ্য এর আগে কোনও মহাকাশ অভিযানের মাধ্যমে উঠে আসেনি।
Chandrayaan-2 প্রযুক্তিগত দিক থেকে অনেক বেশি উন্নত। তাই বিজ্ঞানীদের এই তথ্য খুঁজে পেতে খুব বেশি বেগ পেতে হয়নি। ISRO প্রধান কে শিভান জানিয়েছেন- ‘Chandrayaan-2 তৈরিতে নানারকম উচ্চগুণমানসম্পন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে। তাই এই তথ্য পাওয়া সম্ভবপর হয়েছে।
Chandrayaan-2 ইনফ্রারেড বর্ণমালার কিছু ছবি তৈরি করেছে ৷ যা ISRO- র বিজ্ঞানীদের বড় সাফল্য বলেই মনে করা হচ্ছে৷ চাঁদে গবেষণার ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক তথ্যভাণ্ডার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে ৷ ছবি বিশ্লেষণ করে স্পষ্ট, চাঁদে প্রচুর জলীয় অণু বিদ্যমান৷ চন্দ্রপৃষ্ঠের ২৯°- ৬২° ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে হাইড্রক্সিল ও জলের উপস্থিতি দেখা গিয়েছে৷
পাশাপাশি, চাঁদে যেসব পাথর ও খনিজ পদার্থের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, তার মধ্যে ফেজিওক্লেজ রয়েছে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে৷ এই জন্যই হাইড্রক্সিল ও জলের উপস্থিতির সম্ভাবনা আরও জোর দিয়ে বলা হচ্ছে৷ গবেষকরা মনে করছেন, Chandrayaan-2-এর জোগাড় করা তথ্য বিশ্লেষণ করলে বোঝা যাবে, চাঁদের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জলের অস্তিত্বের সম্ভাবনা আরও প্রকট হয়েছে ৷