‘‌অবিলম্বে সাসপেনশন তুলে ছাত্রদের ক্লাসে ফেরাতে হবে’‌, ধাক্কা খেল বিশ্বভারতী

বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে জোর ধাক্কা খেল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। বেশ কয়েকদিন ধরেই সেখানে ছাত্র আন্দোলন চলছিল। তার জেরে অচলাবস্থা তৈরি হয়। এটার কারণই হল তিন পড়ুয়া সাসপেন্ড করেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এবার সাসপেন্ড হওয়া ৩ পড়ুয়ার শাস্তি প্রত্যাহার করে অবিলম্বে তাঁদের ক্লাসে ফেরানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এমনকী বৃহস্পতিবার থেকেই তাঁরা যেন ক্লাস করতে পারে, তা দেখতে বলা হয়েছে। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে এসবই জানিয়েছেন এবং একাধিক নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। শুনানি চলাকালীন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর আচরণ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন বিচারপতি। ভর্ৎসনা পর্যন্ত করা হয়েছে।

ঠিক কী ঘটেছিল?‌ সমস্যার শুরু হয় জানুয়ারি মাস থেকে। অর্থনীতি এবং রাজনীতি বিভাগের ছাত্র ফাল্গুনী পান, সোমনাথ সৌ এবং হিন্দুস্থানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত বিভাগের ছাত্রী রূপা চক্রবর্তীকে সাসপেন্ড করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, উপাচার্যের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন তাঁরা। তাই সাসপেনশনের সিদ্ধান্ত। পরে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারও করেন উপাচার্য। যার প্রতিবাদে কলকাতা হাইকোর্টে পালটা মামলা করেন ছাত্রছাত্রীরা।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ

আজ সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসে। তিনি এই মামলার অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশে জানান, অবিলম্বে ওই তিন পড়ুয়াকে ক্লাসে ফেরাতে হবে। তবে তার জন্য একটি শর্তও দিয়েছেন তিনি। এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে যে ছাত্রদের অবস্থা বিক্ষোভ চলছে সেটা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পঠনপাঠনের পরিবেশ ফেরাতে হবে।

এদিন শুনানিতে ছাত্রদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘শাস্তি হিসেবে তিন বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয় পড়ুয়াদের। ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী, ছাত্ররা ভুল করলে ক্ষমা চাইবে ক্লাসে যাবে। এটা কী ধরনের আচরণ? বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বলেন, ‘ধরে নিলাম উপাচার্যের আচরণ খুব খারাপ। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা আদালতে আসতে পারতেন। এভাবে প্রতিবাদ কেন?’‌ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের দাবি আইন-আদালত করার আর্থিক সামর্থ্য নেই পড়ুয়াদের। তিনি বলেন, ‘টাকা কোথায় ছাত্রদের?’

তারপরেই বিচারপতি রাজশেখর মান্থা বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি যে ছাত্রদের সঙ্গে যা হয়েছে, সেটা ঠিক হয়নি। আমি ছাত্রদের সাসপেনশন তুলে দিতে বলছি। বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত অনেক বেশি শাস্তি। অবিলম্বে তাঁদের ক্লাসে ফেরাতে হবে।’‌ এই রায়ের পর স্বাভাবিকভাবেই উপাচার্যের মুখ পুড়েছে বলে মনে করছেন পড়ুয়া থেকে অধ্যাপকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.