চোদ্দর ভোটে মোদী ঝড়ের কাণ্ডারীকে মেন্টর করে নিয়ে এসেছে তৃণমূল। নির্বাচন কৌশলী প্রশান্ত কিশোরকে দলের হাল ফেরাতে নিয়োগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই পিকে-র কথাও শুনছেন না মদন মিত্র। বরং সব বারণ অগ্রাহ্য করে আয়োজন করে ফেললেন ‘রামকথা’র! তাও কোথায়? দিদি-র প্রায় দোরগোড়ায়! ভবানীপুরে।
দিদি-অভিষেককে কী বলেছিলেন প্রশান্ত কিশোর?
সূত্রের খবর, মমতাকে প্রশান্ত স্পষ্ট জানিয়ে দেন, রাজনীতির আলোচনায় ধর্মকে আনা যাবে না। বিজেপি এই ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করবে। ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করবে। কিন্তু তৃণমূলের উচিত হবে উন্নয়নকে রাজনৈতিক বিতর্কের ইস্যু করে তোলা। বস্তুত সে কারণেই তৃণমূলের নেতারা এখন ‘জয় শ্রীরাম’ শুনে কোনও প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন না।
কিন্তু মদন মিত্র-র কানে বুঝি সে কথা পৌঁছয়নি। তিনি যেন এ সবের শত যোজন দূরে!
কদিন আগে ফেসবুক লাইভে এসে তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেছিলেন, “আমি এখন একটা চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি।” বোঝাতে চেয়েছিলেন, অনেক রাস্তা খোলা তাঁর সামনে। এ বার ভবানীপুরে নিজের বাড়িতে ‘রামকথা’র আয়োজন করে বসেছেন তিনি। নেমন্তন্ন পর্ব সারা হয়ে গিয়েছে। অনুষ্ঠানে কীর্তনের পর থাকছে এলাহি প্রসাদের ব্যবস্থাও। তবে নিমন্ত্রিতদের তালিকায় হেভিওয়েট কারা থাকছেন, যে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি।
সংবাদমাধ্যমেকে রামকথা নিয়ে মদন বলেন, “আমি এটা তৃণমূলের নেতা হিসেবে করছি না। দেশের নাগরিক হিসেবে করছি। যে দেশের সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলে।”
ভাটপাড়ায় হারের পর ফেসবুক লাইভে সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়দের নাম করে মদন বলেছিলেন, “অনেকের নাম থাকলেও, আমাকেই শুধু সিবিআই বলির পাঁঠা করেছে।” মমতা সরকারের কারা দফতরকে সরাসরি কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন মদন। বলেছিলেন, “মাওবাদী ছত্রধর মাহাতোকে প্যারলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমায় দেওয়া হয়নি। আমি তৎকালীন কারামন্ত্রী হায়দার আজিজ সফিকে ৪৩টি আবেদন করেছিলাম। সবগুলো চেপে দেওয়া হয়েছিল।” আক্ষেপের সুরে মদন বলেছিলেন, “সেই সময়ে যদি আমায় ৫ দিনের জন্য প্যারোল দেওয়া হতো, তাহলে ১৬-র ভোটে আমায় কামারহাটিতে হারতে হতো না।”
মদনের রামকথায় কারা কারা উপস্থিত হন, এখন সে দিকেই চোখ রাজনৈতিক মহলের। চোখ শাসক দলের অনেকেরও।