হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি করেছিল ব্রিটিশরা। তার ফলে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল। শুরু হয়েছিল দ্বন্দ্ব। সোমবার ‘ঐক্যের’ বার্তা দিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত। সেইসঙ্গে তাঁর দাবি, ভারতে বসবাসকারী হিন্দু এবং মুসলিমদের পূর্বপুরুষরা একই। সকলেই ‘হিন্দুও’ বলে দাবি করেন তিনি।
মুম্বইয়ে ‘রাষ্ট্র প্রথম – রাষ্ট্র সর্বোপরি’ বিষয়ক একটি সভায় ভাগবত দাবি করেন, ব্রিটিশরা মুসলিমদের বলেছিল যে হিন্দুদের সঙ্গে থাকলে কিছু পাওয়া যাবে না। তাঁর কথায়, ‘ব্রিটিশরা মুসলিমদের বলেছিল যে শুধুমাত্র হিন্দুরা নির্বাচিত হবেন এবং একত্রিতভাবে তাঁরা একটি পৃথক (দেশের) দাবির জন্য ঝাঁপাবেন। তারা (ব্রিটিশরা) বলেছিল যে ভারত থেকে ইসলাম মুছে যাবে। সেটা কি হয়েছে? মুসলিমরা যে কোনও পদে বসতে পারেন।’
শুধু মুসলিম নয়, হিন্দুদের মনেও ব্রিটিশরা ইসলাম-বিরোধী মনোভাব তৈরি করেছিল বলে দাবি করেন সংঘ প্রধান। তিনি বলেন, হিন্দুদের মনে গেঁথে দেওয়া হয়েছিল যে মুসলিমরা উগ্রপন্থী। ‘দুটি সম্প্রদায়কে ওরা লড়িয়ে দিয়েছিল। সেই দ্বন্দ্ব এবং অবিশ্বাসের বাতাবরণের জন্য দুই সম্প্রদায় একে অপরের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে এসেছে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পালটাতে হবে।’ ভাগবতের বক্তব্য, দুই সম্প্রদায়কেই একইসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। কাজ করতে হবে একসঙ্গে। যা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সংঘ প্রধানের কথায়, ‘আমাদের ঐক্যের মূল ভিত্তি হল আমাদের মাতৃভূমি এবং গৌরবময় ঐতিহ্য। ভারতে বসবাসকারী হিন্দু এবং মুসলিমদের পূর্বপুরুষরা একই।’
সোমবার সেই ঐক্যের বার্তার মধ্যেই ‘হিন্দু’ শব্দের ব্যাখ্যা দেন ভাগবত। বলেন, ‘আমার মতে, হিন্দু হল মাতৃভূমি, পূর্বপুরুষ এবং ভারতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্যের প্রতীক। হিন্দু কোনও বর্ণ বা ভাষাগত বিশেষ্য নয়। বরং এটা উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য, সবধরনের মানুষের উন্নতি। ভাষা, বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে যারা এই (মতাদর্শে) বিশ্বাস করেন, তারা হল হিন্দু। সেই প্রসঙ্গে আমরা প্রত্যেক ভারতীয়কে হিন্দু হিসেবে বিবেচনা করি।’
মুসলিম সম্প্রদায়ের বিশিষ্টদের উদ্দেশ করে ভাগবত বলেন, ‘একে অপরের মত নিয়ে কোনও অসম্মানের জায়গা থাকবে না। তবে মুসলিম আধিপত্যের বিষয়ে নয়, আমাদের ভারতের আধিপত্যের বিষয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’