তাহলে রাত দিন তিন শিফটে যে ৩২৫ জনের কলকাতা পুলিশ হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের শান্তিনিকেতন নামক ছোটখাট প্রাসাদ চোখের পাতা না ফেলে ঘিরে রাখেন সেটি তাহলে কার ?

নীচের ঘোষণাপত্রটি ২০১৯এ ডায়মন্ড হারবারের লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাওয়া খোকাবাবুর । খোকাবাবুটি জানিয়েছিলেন তাঁর নিজের কোন বাড়ি নেই । মস্ত বড় একটা NA লিখে এফিডেভিট জমা দিয়েছিলেন । কমার্শিয়াল বা রেসিডেনসিয়াল কোন বিল্ডিং বা বাড়ি তার নেই । উত্তরাধিকার সূত্রেও তিনি নাকি কিছুই পান নি ।

তাহলে রাত দিন তিন শিফটে যে ৩২৫ জনের কলকাতা পুলিশ হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের শান্তিনিকেতন নামক ছোটখাট প্রাসাদ চোখের পাতা না ফেলে ঘিরে রাখেন সেটি তাহলে কার ? সেটিতে খোকাবাবু তো থাকেন । সস্ত্রীক, সপরিবারে । সেই বাড়িটি কার তাহলে ? দুষ্টু লোকেরা বলতেই পারেন স্ত্রী রুজিরার বাড়িতে খোকাবাবু থাকেন । সেক্ষেত্রে রুজিরাকে বাড়িটা তো করতে হয়েছে । সেই টাকাটা তাহলে কে দিয়েছে ? কার টাকা সেটা ? বাড়িটিতে আধুনিক জীবন যাত্রার সব উপকরণ আছে । যাঁরা তাঁর বৃত্তের লোক এমন একজনেরই কাছে শুনেছি । চোখ ধাঁধিয়ে দেওয়া সব আয়োজন ।

সেই আয়োজনের খরচ তো কাউকে না কাউকে করতে হয়েছে । কে দিয়েছে সেই টাকা ? এসব প্রশ্ন যদি আজ ই ডি ফট করে প্রশ্ন করে বসে উত্তর কি দেবেন খোকাবাবু ভাবছিলাম শুধু সেটাই ।
ভাবছিলাম তাইল্যান্ডের কাশিকর্ন ব্যাংকের ব্যাংক ট্রান্সএকশনের রিসিপ্ট খোকাবাবুর সামনে ফেললে কি বলবেন তিনি ? বলবেন, জানিনা তো ? রুজিরা নারুলা কে তিনি চেনেন না বলবেন তো ? রুজীরা নারুলার একাউন্ট ঘুরে সেই টাকা লন্ডনের এক শালীর একাউন্টে ঢুকেছে এবং সেখানে ব্যবসায় কত কোথায় ইনভেস্টেড হয়েছে তার প্রমাণও ই ডি র হাতে এসে গেছে এই মুহূর্তে ।
বিনয়ের দেওয়া কয়েক হাজার কোটি টাকা যে পথে যেখানে গেছে তার সব প্রমাণও ই ডি র হাতে এসে গেছে । এবং তারপরেই খোকার ডাক স্ত্রী, আইনজীবী, আই পি এস সহ বৃত্তের সবাইকে ।

এখন প্রশ্ন হল এত কিছুর পর কি হবে ? মাঝে মাঝে গা হাত পা ঝেড়ে উঠে বসবে ই ডি, সি বি আই । তারপর বেশ কিছুদিন সবাই মিলে ঘুমোবে ? ভাবখানা দেখে মনে হবে কই কিছু তো হয়নি, এমন ।
ঠিক এই বাস্তবতায় আজ খোকাবাবু বাক্স প্যাটরা গুছিয়ে ফ্লাইট ধরলেন । দমদম বিমান বন্দরে লাউঞ্জে ঢোকার আগে বলে গেলেন – দশ পয়সা মেরেছি প্রমাণ করতে পারলে হাসতে হাসতে ফাঁসির মঞ্চে যাব । টি ভি তে সেই ডায়লগ দেখে বাঙালিরা ভাবতেই পারেন যে ছেলেটা দশ পয়সা মারতে শেখেনি তার সম্বন্ধে এ সব কি কথা হচ্ছে ।

ঠিকই । একদম ঠিক । কালীঘাটে ৩৪ টি প্লটের নাম, তালিকা দিয়ে গণশক্তি ছেপে বার করেছিল ব্যানার্জি পরিবারের হাতে সব কটি প্লট আছে । আজ পর্যন্ত খোকা, খোকার বাবা, কাকা, পিসি এমনকি খোকা পর্যন্ত অস্বীকার করেননি যে তালিকাটা ভুল । কিন্তু যেটা নিশ্চিত সেটা হচ্ছে খোকার নামে এর কোনোটাই নয় ।
এখানেই প্রশ্ন ।
তাহলে খামোখা খোকাকে দোষ দেওয়া কেন ? এটাও তো ভাবা দরকার । নীচের তালিকায় চোখ রাখুন দেখবেন সবেতেই শুধু NA । অর্থাৎ not applicable । লিখেছেন খোকা । বেশ জোর দিয়ে আর এফিডেভিটের সব পাতায় সইও করেছেন নীল কালিতে । এরপরও অবিশ্বাস !

ইডি যতই ডাকুক আমি কিন্তু এরপর বিশ্বাস করব খোকাকেই । কারণ যে ছেলেটা দশ পয়সা মারতে জানে না তাকে কি না দশ জন প্রহরী নিয়ে দিল্লী যেতে হল শুধু গরুর টাকা খাইনি এটা বোঝাতে । কয়লার অবৈধ টাকা ছুঁয়ে দেখিনি সেটা জানাতে । তাইল্যান্ডে কাসিকর্ন ব্যাংকে বিনয় টাকা ঢোকায়নি সেটা নিজের মুখে ঘোষণা করতে !!

বেয়াদপ ই ডি কি জানে না যে যাকে তাঁরা ডেকেছে তাঁর নিজের একটা টালির ঘরও নেই ।

শুধু শুধুই হ্যারাসমেন্ট করবেন একটা দুধের মত শিশুকে !! একবারও ভাবলেন না কি করছেন ।

সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় (৯৮৩০৪২৬০৭৮)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.