উনিশের লোকসভার পর থেকেই ইভিএম-এর জায়গায় ব্যালটে ভোট করানোর সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সূত্রে খবর, ২০২০ সালের পুরভোট ব্যালটে করতে চায় শাসক দল। সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত প্রায় পাকা। প্রস্তুতিও নাকি শুরু হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে গুঞ্জনও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সোমবার নদিয়ার নবদ্বীপের ফকিরতলায় নিহত বিজেপি কর্মীর স্মরণ সভায় যোগ দিয়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায় এ প্রসঙ্গে বললেন, তাহলে বামফ্রন্টকে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়ে ব্যালটে ভোট করুন মমতা।
এ দিন বিজেপি নেতা তথা তৃণমূলের প্রাক্তন সেকেন্ড ইন কম্যান্ডকে প্রশ্ন করা হয়, শাসকদল তো বারবার ব্যালটে ভোট করানোর দাবি জানাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ব্যালট ফেরানোর দাবি জানাবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এই প্রসঙ্গে মুকুলবাবু বলেন, “যখন ওরা ভোটে জেতে তখন বলে ইভিএম ভালো। আর যখন ওরা ভোটে হারে তখন বলে ইভিএম খারাপ। তাহলে ২০১১ সালে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতেছিলেন, ইভিএমটা খারাপ ছিল।
২০১৪ সালে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতেছিলেন, ইভিএমটা খারাপ ছিল। ২০০৯ সালে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতেছিলেন, ইভিএমটা খারাপ ছিল। তাহলে ফিরিয়ে দিন না। আবার বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসুক। ব্যালটে ভোট হোক। কারণ মমতা তো ইভিএমে জিতেছেন। ইভিএম তো খারাপ।”
প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের আগে থেকেই ইভিএম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন মমতা। কর্মিসভা থেকে দলীয় প্রচার, সব জায়গায় কর্মীদের বলেছেন, ইভিএম নিয়ে সতর্ক থাকতে। এমনকী ভোট গণনার আগে কর্মীদের স্ট্রং রুম পাহাড়া দেওয়ারও নিদান দিয়েছিলেন তিনি। আর লোকসভার ফলপ্রকাশের পরে তো সরাসরি দায়ী করেছেন ইভিএমকে। বাংলায় বিজেপি ১৮টা আসন জেতার পর বলেছেন, ‘চিটিংবাজির ভোট হয়েছে।’ তারপর থেকেই ব্যালট ফেরানোর দাবি জানিয়েছে শাসক দল। কিন্তু এই নিয়ে একটা প্রশ্নও উঠছে রাজনৈতিক মহলে। ব্যালটে ছাপ্পা দেওয়া অনেক সহজ। আর তাই তৃণমূলই বিরোধী দল থাকাকালীন ব্যালটে আপত্তি জানিয়ে ইভিএম-এ ভোট করানোর দাবি জানিয়েছিল। আর সেই তৃণমূলই এখন উল্টো সুর গাইছে।
এ দিন মুকুল রায় অবশ্য ২১ জুলাইয়ের সমাবেশকে নিয়েও কটাক্ষ করেন। একদা এই সমাবেশ করানোর সব দায়িত্ব থাকত তাঁর কাঁধেই। সেই মুকুলবাবুই বলেন, “২১শে জুলাইয়ের সমাবেশ তো এখন জলসা। টলিউডের কয়েকজন আসে। সামনে সারিতে বসে। আর যাঁরা শহিদের পরিবার, তাঁদের কোনও সম্মান দেওয়া হয় না।”