আমাদের নিজেদের কথা ভাবলেও লজ্জা হয়। এমন আত্মবিস্মৃত জাত বোধহয় আর নেই। আমরা ইংরেজদের তো বটেই, পারসিক, মোঘল, আফগান তুর্কি, ইত্যাদিদের তা তাঁরা এখানে এসে রাজ্য পত্তনই করুন আর লুটেরা বা ধর্ষNkaরীই হন, কুষ্ঠি ঠিকুজি মুখস্ত করে রাখি। কিন্তু আমাদের নিজেদের পৌরাণিক কাহিনীগুলি তো বটেই ইতিহাসও জানি না। জানি তো নাই, উল্টে জানতে লজ্জাবোধ করি। আর এই লজ্জা বাঙালিদেরই সবচেয়ে বেশি৷ ফরাসি দেশের রেনেসাঁ অথবা লেনিন স্ট্যালিনের গুষ্টির ইতিহাস অথবা মাও-জে দং-এর শরীরগতিক সম্বন্ধে যতখানি খবর আমরা রাখি তার এক কণাও রাখি না শংকরাচার্য কিংবা শিবাজির। শংকরাচার্য কে ছিলেন তা আমরা জানি না। রামকৃষ্ণদেব বা স্বামীবিবেকানন্দের কথাও তেমন জানি না৷ অথচ দক্ষিণভারতে রামকৃষ্ণদেব ও শংকরাচার্যকে ঈশ্বরজ্ঞানে পুজো করা হয়। আমরা রামায়ণ মহাভারতই পড়ি না। যে দুই মহাকাব্যের শিক্ষায় আজও নব্বইভাগ ভারতীয় শিক্ষিত। সেই শিক্ষাতেই তাদের মূল্যবোধ, ন্যায়-অন্যায় বোধ আজও আমাদের চেয়ে অনেকই অন্যরকম। আমরা ইংরাজি জানি, কেবল টিভি দেখি, সি এন এন, বি বি সি। বিজ্ঞাপনের আঠাতে দুচোখ সাঁটা আমাদের৷ অন্য কিছু দেখতেই ভুলে গেছি রাম আর হনুমানকে নিয়ে তামাশা করি। সিউডো ইন্টেলেকচুয়াল বিধর্মী চিত্রীর আঁকা বিবসনা সীতা বা সরস্বতীর ছবি দেখে আহ্লাদ করি৷ আমাদের মহান সাহিত্যিকরা বাংলাদেশে বই বিক্রি অব্যাহত রাখতে গোমাংস ভক্ষণের উপকারিতার গুণগান করেন, আর সেই আমরাই হজরত মহম্মদের কেশ সম্বধে আলোচনা করতে গেলেও সেই দুর্বিনয়ের কারণে যত্রতত্র দা বেঁধে যায়। ভারতীয় হিন্দুরা এক আশ্চর্য প্রজাতি। নীলগিরি পর্বতশ্রেণী গভীরে অতি দুষ্প্রাপ্য স্লো লরিস প্রজাতির বাঁদরের মতো। যাদের চলতে ফিরতে আঠারো মাস।’
- পর্ণমোচী, বুদ্ধদেব গুহ
(পেজ নং -৪৮৮/৮৯, ছবি নীচে দিলাম)
এই রকম লেখার পরও, এই রকম সত্যের দলিলের পরও আপনি পশ্চিমবঙ্গে বসে লিখে গিয়েছেন। এটা নিজে নিজেই সবচেয়ে বড় পুরস্কার। আজ বুঝলাম কি হারালাম আমরা, কাকে হারালাম আমরা। ভালো থাকুন বুদ্ধদেব বাবু৷ আমরা ভাবতাম আমরাই প্রথম মৌচাকে ঢিল ছুৃড়ে বলেছি ‘মহান সাহিত্যিকরা বাংলাদেশে বই বিক্রি অব্যাহত রাখতে গোমাংস ভক্ষণের উপকারিতার গুণগান করেন।’ আজ ভুল ভাঙল৷ আজ বুঝলাম, আপনি অনেক আগেই একা এই লড়াইটা লড়েছেন, জিতেওছেন৷ যেটা আমরা আজ আবার নতুন করে লড়ার চেষ্টা করছি। প্রণাম নেবেন, আমাদের তো তাও ফেসবুক আছে, আপনার তো শুধু কলম ছিল৷ তাও এ অসম লড়াইয়ে আপনি আজ জয়ী৷
শে খ র ভা র তী য়।।
ছবি -ফেসবুক থেকে পাওয়া।