আজ হিন্দু যুগপুরুষ, যোগেন্দ্র শ্রী কৃষ্ণের আবির্ভাব দিবস – শুভ জন্মাষ্টমী।
কিন্তু যে দিন থেকে আমি জানতে পেরেছি যে, কৃষ্ণের জন্মস্থান আজও বিধর্মীদের দখলে; সেদিন থেকেই আমি জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানাতে ভুলে গেছি। সেদিন থেকেই এই দিনে আমার মন থাকে বড়োই ভারাক্রান্ত।
আপনারা কি জানেন যে, সত্যি সত্যিই শ্রী কৃষ্ণের জন্মভূমিতে (মথুরায় কংসের কারাগারের উপর) কেশব দেও মন্দির নামক এক সুবৃহৎ এবং সুরম্য মন্দির ছিল। এই মন্দিরটি ভারতে নির্মিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মন্দির বলে মনে করা হতো, কিন্তু ১০১৭ খ্রিস্টাব্দে গজনীর জানোয়ার মাহমুদ এই মন্দিরটি ধ্বংস করে।গজনীর সেই সহি ইসলামের ছাত্র (তালিব) মাহমুদের পার্ষদ, লেখক মীর মুন্সী আল উৎভি তার ‘তারিখে ইয়ামিনী’ গ্রন্থে এই মন্দিটিকে ধুলিস্যাৎ করার কথা গর্বের সঙ্গে উল্লেখ করেছে। তার মতে, “শহরের কেন্দ্রে একটি বিশাল এবং দুর্দান্ত মন্দির ছিল, মানুষ দ্বারা যা নির্মিত হয়নি বলেই সবাই বিশ্বাস করত। বিশ্বাস করত এমন এক অদ্ভুত সৃষ্টি একমাত্র দেবদূত বা ফেরেশতাদের দ্বারাই নির্মিত হওয়া সম্ভব। কথায় বা ছবিতে এই মন্দিরের সৌন্দর্য প্রকাশ করার যে কোন বিবরণই তার পক্ষে ছোট হয়ে যাবে এবং সম্পূর্ণ ব্যর্থ হবে”।
এর পরেও বেশ কয়েকবার হিন্দুরা ঐ মন্দির বানিয়েছে এবং আল্লার অনুসারীরা বারবার তা দিয়েছে ভেঙ্গে। আর এমনই ভাঙ্গা-গড়ার পড় অবশেষে ১৬৬৯ সালে মোগল বজ্জাত জিন্দাপীর, আলমগীর আরঙ্গজেবের নির্দেশে তার সেনাপতি ইব্রাহীম বাকি এই মন্দিরটি পুরোপুরি ধ্বংস করে এবং সেই মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দিয়েই সেখানে একটি ‘ঈদগা মসজিদ’ বানায় – যা আজও হিন্দুদের দাসত্বের চিহ্ন স্বরূপ ঐ যায়গায় ৪০০ বছর সদম্ভে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
যোগেশ্বর শ্রীকৃষ্ণের; অঘাসুর, বকাসুর, পুতনা, কংস-চানুর বধকারী … মহাবীর শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান – আজও আমাদের অধরা। সেই শ্রীকৃষ্ণ আজও তার হৃত জন্মভূমি পুনরুদ্ধারের সংকল্পে পথে পথে কাঁদেন। অথচ তাঁকে নিয়ে ব্যবসা ফাঁদা কুলাঙ্গারের দল তাঁর অনুগামীদের তা ভুলিয়ে দিতে, তাদের নিয়ে চলে মথুরার ৩৭ কিলোমিটার দূরের বৃন্দাবনের রাসলীলায়। যেখানে শুধুই চলে কান্নাকাটি। তবে তা কী শৌর্য্য বীর্য ভরা মহাভারতের শ্রেষ্ঠ কূটনীতিক শ্রীকৃষ্ণের দিকে তাকিয়ে? – না, অন্য কিছুর জন্যে? তা বিচারের ভার আপনাদের।
তবে এই যায়গায় দাঁড়িয়ে আসুন আজ সঙ্কল্প গ্রহণ করি, – যতদিন পর্যন্ত না, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মস্থান ঐ পবিত্র তীর্থস্থান… পাপিষ্ঠ বিধর্মীদের থেকে দখলমুক্ত করে আমরা তাঁর শ্রীচরণে নিবেদন করতে না পারছি, ততদিন পর্যন্ত যেন আমাদের এই লড়াই জারী থাকে। আমরা যেন কখনোই আমাদের পরাধীনতার এই গ্লানি বিস্মৃত না হই।
জয় শ্রী কৃষ্ণ
ওঁ নমঃ ভগবতে শ্রী বাসুদেবায় নমঃ