রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী হিংসার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলার তদন্তের ব্যাপারে বিশেষ তদন্ত টিম বা সিটের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিরোধী দল বিজেপি সহ নানা মহলের দাবি, সিটের তেমন সক্রিয় ভূমিকা চোখে পড়ছে না।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ফল বেরনোর পর বিরোধী দলগুলির কর্মী সমর্থকদের ওপর শাসক দলের অত্যাচারের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলাগুলির ব্যাপারে কয়েকদিন আগেই কলকাতা হাইকোর্ট তার আদেশে জানায়, ধর্ষণ, খুনের মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ সংক্রান্ত মামলাগুলির তদন্ত করবে সিবিআই। তুলনামূলক ভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ, লঘু মামলাগুলির তদন্তে সিট গড়তে বলে হাইকোর্টের ৫ বিচারপতির বেঞ্চ। আদালতের নজরদারিতে তদন্ত হবে।
ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের কাজে নেমে পড়েছে। কলকাতায় এসে সিবিআইয়ের টিম বিভিন্ন জেলার পুলিশের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিয়েছে। ৬ সপ্তাহের মধ্যে তাদের স্ট্যাটাস রিপোর্ট পেশ করতে হবে আদালতে।
কিন্তু কলকাতার পুলিশ কমিশনার সোমেন মিত্র ও আরও দুই আইপিএস অফিসারকে নিয়ে গঠিত সিট এখনও তথ্যপ্রমাণ, নথি সংগ্রহের কাজই শুরু করে উঠতে পারেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। কেন তাদের তরফে এই ‘ঢিলেমি’, সে প্রশ্নও উঠছে।
যদিও এব্যাপারে জনৈক আধিকারিকের বক্তব্য, শীঘ্রই সিট জেলাগুলি থেকে তথ্য সংগ্রহ শুরু করবে।
সোমবারই সিবিআইয়ের একটি দল নির্বাচন পরবর্তী হিংসার বলি বেলেঘাটার বাসিন্দা বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকারের বাড়ি যায়। সিবিআই খুন, ধর্ষণের অভিযোগের মামলাগুলির তদন্তে চারটি সিট গড়েছে। রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছে এপর্যন্ত যতদূর তদন্ত হয়েছে, তার বিস্তারিত নথি, ফাইলপত্রও চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে তারা।
প্রসঙ্গত, রাজ্য সরকার নির্বাচনী হিংসার জন্য নির্বাচন কমিশনই দায়ী বলে দাবি করে যে যুক্তি সাজিয়েছিল, তা হাইকোর্ট ১৯ আগস্টের রায়ে খারিজ করেছে। রাজ্যের যুক্তি ছিল, ২০২১ এর ৩ মে পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধি বহাল থাকায় পুলিশও তার আওতায় ছিল। তাই হিংসার দায় কমিশনকে নিতে হবে। কিন্তু হাইকোর্টের বেঞ্চ বলে, নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলাকালে পুলিশ বা প্রশাসন কমিশনের আওতায় থাকে কেবলমাত্র অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য, কিন্তু তার মানে এটা নয় যে, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে তার স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করা থেকে বিরত থাকবে।