করোনা যুদ্ধে গরিব দেশগুলিকে সাহায্য করবে ভারত, কবে থেকে শুরু হবে টিকা রফতানি?

জোরকদমে চলছে দেশের টিকাকরণ কর্মসূচী (COVID-19 Vaccination)। এখনও অবধি সাড়ে পাঁচ কোটিরও বেশি করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে। এ বার বিদেশেও করোনা টিকা রফতানির (Vaccine Export) পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র।

কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ প্য়ানেলের সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী বছর থেকেই করোনা টিফা রফতানি শুরু করতে পারে সরকার। জাতীয় কারিগরি পরামর্শদাতা গোষ্ঠীর অধ্যক্ষ এনকে অরোরা মঙ্গলবার একটি সাক্ষাৎকারে বলে, “প্রায় ৬০টি দেশ করোনা টিকা পাচ্ছেই না। আগামী ২০২২ সাল থেকে ভারত টিকা রফতানি করে কিছুটা সাহায্য করতে পারে। দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেই আমরা গোটা বিশ্বের সঙ্গে উৎপাদিত করোনা টিকা ভাগ করে নিতে পারব।”

আমেরিকার পর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতেই করোনা সংক্রমণ সর্বোচ্চ, ৩০ কোটিরও বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে টিকা উৎপাদনের কাজও জোরকদমে চলছে। চলতি বছরের শেষভাগের মধ্যেই ৬টি নতুন ভ্যাকসিন বাজারে আসতে পারে। ভারত সরকারের তরফেও দেশের জনগণকে টিকা দেওয়ার পাশাপাশি ফের একবার বিদেশে টিকা রফতানি শুরু করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। বিভিন্ন টিকা ও টিকাকরণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দেশে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের উৎপাদন শুরু হওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদার পৌরহিত্যে একাধিক আর্থিকভাবে দুর্বল ও মিত্র দেশগুলিতে করোনা টিকা পাঠানো হয়েছিল সৌজন্যের খাতিরে। কোভ্যাক্সের অনুমোদন মিললে তা বিশ্ব বাজারে টিকা সরবরাহ বাড়াতে পারে। কিন্তু দেশে টিকা সঙ্কট দেখা যাওয়া আপাতত বন্ধই রাখা হয়েছে বিদেশে টিকা সরবরাহ।

চলতি বছরের শেষভাগের মধ্যেই দেশের সমস্ত প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাকরণের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে কেন্দ্র। ইতিমধ্য়েই দেশের একটি বড় অংশের জনগণ করোনা টিকার প্রথম ডোজ় পেয়ে গিয়েছেন। ১০ শতাংশ জনগণ করোনা টিকার দুটি ডোজই পেয়ে গিয়েছেন। ডিসেম্বরের মধ্যেই বাকিদেরও টিকাকরণ সম্ভব হবে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে, দেশে একাধিক নতুন ভ্যাকসিন অনুমোদন পাওয়ায় টিকার ঘাটতিও মেটানো সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। রাশিয়ার স্পুটনিক ভি, জ়াইডাস ক্যাডিলা, জনসনের সিঙ্গেল ডোজ়ের টিকা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োগের অনুমোদন পেয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই দেশেও এই টিকাগুলির উৎপাদন শুরু হবে।

কেন্দ্রীয় প্যানেলের সদস্য ডঃ অরোরা জানান, প্রথমে কিছু সমস্যা থাকলেও বর্তমানে সেরাম ইন্সটিটিউট প্রতি মাসে প্রায় ১৫ কোটি করোনা টিকা উৎপাদন করছে। সেপ্টেম্বর থেকে ভারত বায়োটেকের তরফেও প্রতি মাসে ১২ কোটি টিকা উৎপাদন করা হবে। বায়োলজিক্যাল ই, বায়োফার্মাসিউটক্য়ালও শীঘ্রই টিকা উৎপাদনের কাজ শুরু করবে। টিকা উৎপাদন বাড়লে দেশে টিকাকরণের গতিও আরও বাড়বে এবং আগামী বছর থেকেই বিদেশেও করোনা টিকা রফতানি শুরু করা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.