‘অন্যায়ভাবে’ বদলি, বিকাশ ভবনের সামনে ‘বিষ’ পান ৫ শিক্ষিকার

‘অন্যায়ভাবে’ বদলির অভিযোগে বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন পাঁচজন এসএসকে এবং এমএসকে শিক্ষিকা। আচমকা তাঁরা ‘বিষ’ পান করেন। চিকিৎসার জন্য তাঁদের ভরতি করা হয় বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে। পরে দু’জনকে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার ওই পাঁচ শিক্ষিকা বিকাশ ভবনে আসেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে দাবি তোলেন। তাঁদের দেখা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, যদিও শিক্ষামন্ত্রী সেইসময় বিকাশ ভবনে ছিলেন না। শিক্ষামন্ত্রীর দেখা না পেয়ে বিকাশ ভবনের বাইরে বেরিয়ে আসেন শিক্ষিকারা। বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ট্রেন্ডিং স্টোরিজ

তাঁরা দাবি করেন, শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে একাধিক আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। নবান্নের সামনে গিয়েছিলেন। গ্রেফতারও হয়েছিলেন। আন্দোলনের ‘শাস্তি’ হিসেবে তাঁদের ‘হোম ডিস্ট্রিক্ট’ থেকে বহু দূরে বদলি দেওয়া হয়েছে। পুতুল মণ্ডল নামে এক শিক্ষিকা দাবি করেন, তাঁর বাড়ি বকখালিতে। অথচ কোচবিহারের উত্তরবঙ্গে বদলি দেওয়া হয়েছে। কাউকে মালদহে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনিমা নাথ নামে এক শিক্ষিকা বলেন, ‘মাসে মাত্র ১০,০০০ টাকা বেতন দেওয়া হয়। আমাদের ২০,০০০ টাকা দিক, ৩০,০০০ টাকা দিক, আমরা যাব। আমরা আজ মরে যাব।’

সেই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ঘটনাস্থলে আসে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ। মহিলা পুলিশকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষিকাদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পুরুষকর্মীর উর্দি ধরে টানেন দু’জন শিক্ষিকা। হাতে একটি শিশি বিষ পানের হুমকিও দিতে থাকেন। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির মধ্যেই তাঁরা ‘বিষ’ পান করেন। তাঁদের মুখ থেকে সাদা গ্যাঁজলা জাতীয় কিছু উঠে আসতে থাকে। তারপরই তড়িঘড়ি পাঁচজনকে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে দু’জনকে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

শিক্ষিকাদের ‘বিষ’ পানের ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপির বক্তব্য, শিক্ষামন্ত্রীর সবকিছুর জন্য সময় আছে। তিনি ত্রিপুরায় যেতে পারছেন। রাজনীতি করতে পারছেন। অথচ শিক্ষিকাদের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। অন্যদিকে, শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘যদি এই ঘটনায় কেউ অসুস্থ হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।’ সেইসঙ্গে তিনি জানান, কেউ বা কারা প্ররোচনা দিয়েছেন কিনা দেখতে হবে। চাকরি করতে গেলে বদলি করতে হয়। সমস্যা থাকলেও চেষ্টা করছে রাজ্য, সেটা বুঝতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.