পুজোর মাসেই দেশে কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ে সংক্রমিতের সংখ্যা শিখরে উঠতে পারে বলে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। সেই সময় তুলনামূলক ভাবে বেশি সংখ্যক শিশু সংক্রমিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত কমিটির ওই রিপোর্টে। শিশুদের নিয়ে আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন না শহরের চিকিৎসকরাও। শিশুরা যাতে কোভিডে আক্রন্ত না হয়, তার জন্য সচেতন থাকতে হবে। বড়রা কোভিড বিধি না মানলে বাড়ির শিশুরাই বেশি বিপদে পড়বে বলে মনে করছেন রাজ্যের করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলা কমিটির সদস্য চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ।
শিশুকে রক্ষা করতে বড়রা কী কী ভুল করবেন না, তার পথ বাতলে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা বলছেন, বড়রা কোভিড বিধি পালনে অনীহা দেখাবেন না। আপাতত কিছু দিন শিশুদের নিয়ে যত্রতত্র বেড়াতে যাবেন না। একই সঙ্গে চিকিৎসকদের পরামর্শ, ছোট বদ্ধ জায়গা বা রেস্তোঁরায় শিশুদের নিয়ে সাবধান থাকতে হবে বড়দের। বাবা-মা যাতে খুদের কোভিড টেস্টে লজ্জা বা ভয় না পান, সে দিকেও নজর দিতে হবে। ৫ বছরের কম বয়স বা খুদেদের মাস্ক পরার ক্ষেত্রে কোনও বাধ্য বাধকতা নেই। তাই তাদের সুরক্ষার জন্য বড়দের মাস্ক পরায় অবহেলা না করতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
খুদেরা শারিরীক অসুস্থতা বোধ করলেও বোঝাতে পারে না। সে ক্ষেত্রে শারিরীক উপসর্গ দেখে মা-বাবাকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ শিশু চিকিৎসক অগ্নিমিতা গিরি সরকারের। যেহেতু শিশুদের পাল্স অক্সিমিটার দিয়ে পাল্স রেট দেখার সুয়োগ নেই, তাই অন্যান্য শারীরিক লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনে কোভিড টেস্ট করাতে হবে।
ছটফটে শিশু চুপচাপ বা নিস্তেজ হয়ে পরছে কি না, কো-মর্বিডিটি যুক্ত শিশুর শরীর বেশি খারাপ হচ্ছে কি না, সে দিকে নজর দিতে হবে। একই সঙ্গে নজর রাখতে হবে, শিশুর জ্বর আছে কি না। জ্বর এলে কখন, কত জ্বর থাকছে, তার তালিকা রাখা। শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে কি না, বাচ্চার খিদে কমে যাচ্ছে কি না তা-ও খেয়াল রাখতে হবে বাবা-মাকেই। অসুস্থ বাচ্চা ডিহাইড্রেটেড যাতে না হয়ে যায়, তার জন্য পর্যাপ্ত জল এবং ওআরএস খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। নজর রাখতে হবে, বাচ্চার প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাচ্ছে কি না।
বাচ্চার বাচ্চার ব্রিদিং রেট দেখাও বাবা-মায়ের কর্তব্য। বাচ্চা বুক কত বার ওঠা নামা করছে তা দেখে ব্রিদিং রেট বোঝা যায়। ২ মাস পর্যন্ত বয়সে ৬০ বারের বেশি, ২ মাস থেকে ১ বছরের মধ্যে ৫০ বারের বেশি এবং ৫ বছরের মধ্যে ৪০ বারের বেশি ব্রিদিং রেট থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
কোভিড আবহে অনেক সময় হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে যেতে সমস্যা হতে পারে। এর জন্য আগে থেকেই যে হাসপাতালে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে শিশুদের চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে, তার ফোন নম্বর হাতের কাছে রাখাই শ্রেয়।