গতকাল, সোমবার কাবুল ছেড়ে এসেছিল এক মার্কিন যাত্রীবাহী বিমান। ভিডিওয় দেখা গেছিল, সেই বিমানে ওঠার জন্য শয়েশয়ে মানুষ ছুটছেন, গা বেয়ে উঠছেন। তার পরে মাঝআকাশে ওড়ার পরে বিমানটির চাকা থেকে ছিটকে পড়েছিলেন দু’জন মানুষ! সারা বিশ্ব শিউরে উঠেছিল সে ভিডিও দেখে। আজ, ওই বিমানসংস্থা জানাল, বিমানটির চাকায় মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে।
সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গতকালের ঘটনার পরে বিমানটি অন্য দেশে জরুরি অবতরণ করে। ওড়ার সময়েই চাকা গুটিয়ে নেওয়ার কথা ছিল, তা সম্ভব হয়নি। সেই কারণে জরুরি অবতরণ করতে হয়। ততক্ষণে ঘটে গেছে চরম মর্মান্তিক ঘটনা।
দেখুন ভিডিও।
জানা গেছে, অবতরণের পরে সমস্যার কারণ খুঁজে দেখতে গিয়ে চাকায় জড়ানো দেহাবশেষ খুঁজে পান বিমানকর্মীরা।
রবিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল তালিবান দখলে চলে যাওয়ার পরেই দিনভর বহু মরিয়া আফগান নাগরিক যে কোনও উপায়ে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করতে থাকেন। গতকাল সেই কারণেই কাবুল বিমানবন্দরে চরম বিশৃঙ্খল অবস্থা তৈরি হয়। ভিড় সামাল দিতে চলে গুলিও। পদপিষ্ট হয়ে মারাও যান ৫ জন।
একসময়ে বিমান ওঠানামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। জনগণকে সরিয়ে আনার জন্য আমেরিকা আরও সৈন্য পাঠায় আফগানিস্তানে। কিন্তু তার আগেই দেখা যায় রানওয়ে পর্যন্ত পৌঁছে গেছে মানুষের ভিড়। বহু মানুষ প্লেনের সঙ্গে সঙ্গে ছুটছেন, কেউ আবার প্লেনের বাইরে দিয়েই চড়ার চেষ্টা করছেন। এই সময়েই দু’জন লুকিয়ে পড়েছিলেন বিমানের চাকায়। তাঁরা কি ভেবেছিলেন ওভাবেই চলে যেতে পারবেন! তা আর জানা যায়নি। কয়েক হাজার ফুট উঁচু বিমান থেকে ছিটকে পড়ার পরে তাঁদের আর খুঁজে পাওয়া যায়নি স্বাভাবিক ভাবেই।
প্রশ্ন উঠেছে, বিমান উড়ানের আগে কি ন্যূনতম পরীক্ষা করে দেখা হয়নি? তবে যে সব ভিডিও সামনে এসেছে, তাতে অনেকের কাছেই স্পষ্ট, মার্কিন বিমানটিও মরিয়া ছিল কাবুল ছেড়ে আসতে।
আফগানিস্তানকে শাসন করার ক্ষমতা তালিবান পাওয়ার পর থেকেই দেশজুড়ে চরম আতঙ্ক। এই পরিস্থিতিতে ৬০টিরও বেশি দেশ যৌথ বিবৃতি দিয়ে তালিবানকে জানিয়েছে, মানুষদের যেন বেরোতে দেওয়া হয়। এছাড়াও জাতিসংঘর তরফে সব দেশকে অনুরোধ করা হয়েছে, আফগান শরণার্থীদের যেন থাকতে দেওয়া হয়।