১৬ আগস্ট খেলা হবের আগেই কি ত্রিপুরায় খেলা শেষ ? বিকেল না গড়ালে উত্তর পাওয়া যাবে না ।
আজ সাড়ে ৬ টার ফ্লাইটে পড়ি মরি করে দোলা সেন, অপরূপা পোদ্দার কলকাতা ফিরে এসেছেন সহযোগীর চিকিৎসা করানোর অজুহাত দেখিয়ে । খবর আজ আম্বাসা থেকে ফেরার পথে বেদম মার খেয়েছে তাঁদের গাড়ি । ভেঙে চুড় চুড করে দিয়েছে ঘাতকরা । মাথা ভেঙেছে দোলার সহায়ক জাকিরের । যাঁরাই করে থাকুন ঘোর অন্যায় করেছেন । নির্দ্বিধায় বলছি সরকারের দেখা দরকার ।
কিন্তু কে ভেঙেছে ? ত্রিপুরা বি জে পি বলছে তাঁরা নন । যদি সত্যি তাই হয় তাহলে পড়ে থাকে সি পি এম । সি পি এম নিজেই খুব খারাপ অবস্থায় । তাঁরা করবেনই বা কেন ? তাঁদের শক্তিই বা কোথায় ? তাহলে বাকি থাকে অন্য তত্ব । সাজানো ঘটনা । পরামর্শ দাতাদের দ্বারা planned । আলোতে আসার জন্য প্লট সাজানো, লোক নিয়োগ করা এবং এই কীর্তি । অনেকে বিশ্বাস করবেন না তাও বলছি তৃণমূল দলটার দ্বারা সব সম্ভব । যাই হোক না কেন, যাঁরাই করে থাকুন না কেন, কাজটা ঘোর অন্যায়, ঘোর, ঘোর,ঘোর ।
এদিকে আজ আগরতলায় দোলার কান্নার মুখটা দেখে বেশ কষ্ট লাগছিল । মনে হচ্ছিল এবার কি তিনি তাঁর দলের নেত্রী এবং তাঁর সর্বভারতীয় ভাইপোকে বোঝাবেন যে এই বাংলায় বিরোধীদের ওপরও যা যা হচ্ছে তা আসলে অন্যায় ?
জানিনা । শুধু আজ দেখলাম দোলা প্রায় কলকাতায় পালিয়ে বাঁচলেন, সঙ্গে অপরূপাও । আর এও খবর পেলাম সাংবাদিক বন্ধুদের কাছ থেকে, ফেলে আসা বাকি ৮ সাংসদের মধ্যে ৬ জন আজ রাতেই ফিরতে চাইছিলেন কলকাতা । মমতা প্রায় ধমকে আটকেছেন তাঁদের । বলেছেন ভুল বার্তা যাবে এটা করলে । আর তাই এখনও এই রাতেও এই ৮ জন সাংসদ আগরতলার সেই বিলাস বহুল হোটেলে বসে রয়েছেন যে হোটেলের লাউঞ্জে গতকাল বিকেলে সাংবাদিক ডেকে বল নিয়ে খেলা হবে, খেলা হবে বলে গান জুড়ে ছিলেন এঁরাই । আবার এঁরাই হয়তো আজ বিনিদ্র রাত কাটাবেন এই চিন্তা করতে করতে যে অনেক হয়েছে বিপ্লবের দেশে বিপ্লব করে । এবার বাড়ি ফিরি দিদিগো ।
দিদি শুনবেন কি না সেটা দিদিই জানেন । আর তার সর্বভারতীয় ভাইপো জানেন । ভয় যে পেয়েছেন এটা পরিষ্কার । ত্রিপুরায় কেস খেয়ে কলকাতা ফিরে সারদা খ্যাত কুণাল ঘোষ সেই যে নিজের বাড়ির সাদা সোফায় বসেছেন আর ওঠার নাম নেই । কোলাপসিবল বন্ধ করে ওখান থেকেই বাইটের পর বাইট দিয়ে যাচ্ছেন । ওঠার নাম গন্ধ নেই । ভয় কিছুটা হলেও পেয়েছেন । মুখের এক্সপ্রেশন বদলেছে ।
তাহলে খেলা কি শেষ, খেলা শুরু হওয়ার আগে ? আমার ধারণা এবার মরিয়া মমতা যাবেন এম আর আই করা পা নিয়ে ত্রিপুরায় রাস্তায় হাঁটতে । কয়েক ফ্লাইট লোক নিয়েও যাবেন ত্রিপুরা বুস্ট করতে । কিম্বা সর্বভারতীয় ভাইপো হয়তো বা ফ্লাইট ধরবেন । জানিনা, কি হবে । সবই সম্ভবনা ।
কিন্তু আজ দোলার “প্রায় কান্না” দেখে আমার অন্তত মনে মনে বেশ কষ্ট হচ্ছিল । আগরতলায় থাকলে আহা তু তু করেও প্রশ্নটা করতাম – দোলাদি কেমন লাগছে এখন ? এটা কি আগে বোঝেননি যে এটা সেই পশ্চিমবঙ্গ নয় যে যা ইচ্ছে করবেন আর তারপর পার পেয়ে যাবেন ?
এর পাশাপাশি একটা জিনিস আরও খেয়াল করলাম । ব্রাত্য, কুণাল, মলয়, অর্পিতা, তাহের, শান্তনু, উজ্জ্বল, কাকলী, প্রসূন এতগুলো মন্ত্রী, এম পি কারুর কিন্তু কোন রক্ত বেরোয়নি এতগুলো গাড়ি ভাঙার পরও । কোন আঁচড়ও লাগেনি । কিভাবে সম্ভব হল ? কোন যাদুতে ? উত্তর খুঁজছি । পেলে জানাব ।
আরও একটা জিনিস খেয়াল করুন বাংলা কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম, তার সঞ্চালক, সঞ্চালিকারা ত্রিপুরা নিয়ে কি মরা কান্নাই না কাঁদছেন । ত্রিপুরায় যেন তাঁদের পিতৃ বিয়োগ হয়েছে ।
কেউ কেউ কলকাতা থেকে রিপোর্টার ওখানে আবার বসিয়ে রেখেছে । ঠিকই করেছে । রাখাই উচিত । আমরা জানব না সব খবর হয় ?
আবার সেই সংবাদ মাধ্যমই পোস্ট পোল ভাওলেন্সের জন্য বাংলায় যখন ৪৩ জন রাজনৈতিক কর্মী খুন হলেন প্রতিটি মৃত্যুর খবর পেয়েও তখন কি অদ্ভুত ভাবে এঁরা নিস্পৃহ ছিলেন মনে পড়ে ? যেন কিছুই হয়নি ভাব করেছিলেন তো এঁরাই, এই সংবাদ মাধ্যম ।
আজ যেমন সন্ধ্যেতে একটা খুব গুরুত্বপূর্ন খবর পেলাম লালবাজারের সোর্সে । দরজা ভেঙে যে সজল ঘোষকে কলকাতা পুলিশের মুচি পাড়া থানা জঙ্গী ধরার কায়দায় লালবাজারে নিয়ে গিয়েছিল সেই সজল কাল আদালতে জামিন পেতে পারে । সম্ভাবনা রোধ করতে আজ গভীর রাতে মুচিপাড়া থানা লালবাজারকে সঙ্গে নিয়ে ” একটা সাজানো আর্মস রিকভারি” করতে পারে সজল ঘোষকে আরও কিছুদিন ঘানি টানানো যাতে যায় তার জন্য । খবরটা পেয়েই সূত্র ধরেই দুটো সংবাদই পাঠালাম সংবাদ মাধ্যমে ।
এই সংবাদেও বাংলা সংবাদ মাধ্যমের কোন ফলো আপ থাকবে না আমি নিশ্চিত । কেন নিশ্চিত বলছি ? একটা উদাহরণ দিই ।
আজ ১৫ আগস্ট । তিনদিন আগে জঙ্গী ধরার কায়দায় মুচি পাড়া থানা সজল ঘোষের বাড়ির দরজা ভেঙে নিয়ে গেছে লালবাজার । সেই দৃশ্য সারা পৃথিবীর বাঙালিরা দেখেছে, রিএক্ট করেছে । তিন দিন ধরে ভগবানকে ভয় না পাওয়া ” বর্তমান ” পত্রিকা মূল সংস্করণে এই খবরটা চেপে গেল । আর ঠিক একই সময়ে এই ” বর্তমান ” পত্রিকা উত্তর প্রদেশের পুলিশ নিয়ে ৪৭ লাইনের একটা লম্বা রিপোর্ট বার করল । আর শুধু সাত দিনেই কয়েকশো সেন্টিমিটার বিজ্ঞাপনও জুটে গেল তাদের । আমি কন্যাশ্রী, আমি ভাগ্যশ্রী, আমি যশস্বী, আমি ভূমিশ্রী আরও কত কি !! কয়েক কোটির পাওনা মিলে গেল ।
এই মিডিয়া ত্রিপুরা নিয়ে মড়া কান্না কাঁদবে না তো কি আমি আপনি কাঁদব ?
ভুল বললাম ? কি বলেন ?
সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় ( ৯৮৩০৪২৬০৭৮)