Afghanistan: কাবুলের ৫০ কিলোমিটার দূরে তালিবান, আমেরিকার নাগরিকদের ফেরাতে সেনা পাঠাচ্ছে পেন্টাগন

সেনা প্রত্যাহার পর্ব চলাকালীনই আফগানিস্তানে নতুন করে সেনা পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল আমেরিকা। তবে তালিবানের আগ্রগতি ঠেকাতে নয়, আফগানিস্তানে কর্মরত আমেরিকার নাগরিকদের ‘মসৃণ ভাবে’ দেশে ফেরাতে। জো বাইডেন সরকারের বিদেশ দফতর সূত্রের খবর, সে আমেরিকার নাগরিকদের পাশাপাশি আমেরিকায় ভিসার আবেদন মঞ্জুর হওয়া বিদেশিরাও এই সেনা-নিরাপত্তার সুযোগ পাবেন। মূলত কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দেখভালের কাজেই লাগানো হবে ৩,০০০ সেনার নয়া বাহিনীকে।

এরই মধ্যে শুক্রবার রাজধানী কাবুলের মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে পৌঁছে গিয়েছে তালিবান বাহিনী। লোগার প্রদেশের রাজধানীম পুলি আলম তার কব্জা করেছে বলে খবর মিলেছে। ওই প্রদেশ থেকে আফগান পার্লামেন্টে নির্বাচিত নেতা সঈদ কারিবুল্লা সদর বলেছেন, ‘‘প্রাণভয়ে মানুষ পালি আলম ছেড়ে পালাচ্ছে।’’

পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি শুক্রবার বলেন, ‘‘আফগানিস্তানে বিভিন্ন দায়িত্ব থাকা আমেরিকার সংস্থা এবং তাদের সহযোগীদের নিরাপত্তার উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ।’’ আমেরিকার প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের নির্দেশে আমেরিকার সেনাকে আফগানিস্তানে কর্মরত অসামরিক কর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।


৯/১১-র হামলার পর থেকে প্রায় দু’দশক বিদেশি সেনা মোতায়েন ছিল আফগানিস্তানের মাটিতে। ২০০১-এর অক্টোবরে প্রাথমিক ভাবে আড়াই হাজার আমেরিকান সেনা তালিবান দমন অভিযান শুরু করে। সেই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন এনডিওরিং ফ্রিডম’। পরবর্তী সময়ে ব্রিটেন-সহ ন্যাটো জোটের বাহিনীও ওই অভিযানে শামিল হয়েছিল। ২০১১-য় আফগানিস্তানের মোতায়েন বিদেশি সেনার সংখ্যা ১ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

কিন্তু ‘নেভি সিল’-এর অভিযানে আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর পরে ধাপে ধাপে সেনা কমানো শুরু করে আমেরিকা। চলতি বছরের গোড়ায় আমেরিকার প্রায় ৫ হাজার সেনা আফগান জনতার নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে ছিল। কিন্তু বাইডেনের নির্দেশে জুলাইয়ের গোড়ায় সেনা প্রত্যাহার শুরু হওয়ায় এখন তা ২,০০০-এর নীচে নেমে এসেছে।

প্রাথমিক ভাবে স্থির করা হয়েছিল আফগান রাষ্ট্রপতি-সহ অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের নিরাপত্তা দেখভাল করতে ৬৫০ জন সেনা কাবুলে রাখবে আমেরিকা। কিন্তু পরবর্তী কালে তা নিয়েও ‘ভাবনাচিন্তা’ শুরু হয়েছে।

গত বছরের গোড়ায় আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরবর্তী পরিস্থিতিতে তালিবান মোকাবিলার ভার আফগান সেনাকে দেওয়ার জন্য তার কয়েক বছর আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। আফগানিস্তানের প্রায় ৩ লক্ষ ফৌজের বাহিনীকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত করার দায়িত্বও নেয় পেন্টাগন।

আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের দাবি, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে আমেরিকা যা খরচ করেছে তার ৬০ শতাংশই হয়েছে আফগান সেনার জন্য। মোট হিসেবে প্রায় ৮,৯০০ কোটি ডলার (৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকারও বেশি)। কিন্তু আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের পর যে ভাবে একের পর এক প্রদেশে তালিবান দখলদারি শুরু হয়েছে, তাতে কাবুলের পতন এখন সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করছে পেন্টাগন। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাই এক মাত্র লক্ষ্য, দ্রুত অসামরিক নাগরিকদের দেশে ফেরানো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.